Cancel Preloader

অলৌকিক কারামত


লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তি লাভ
মহান আল্লাহ্ সৃষ্টির শুরু থেকে কিয়ামত অবধি মানবজাতির মুক্তির জন্য নবুয়তের যুগে নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন ও বেলায়েতের যুগে আওলিয়ায়ে কেরাম প্রেরণ করেন। তাঁরা প্রত্যেকেই এলমে তাসাউফের বিদ্যায় বিদ্বান। তাঁদের সান্নিধ্যে গিয়েই মানুষ উত্তম চরিত্র অর্জন করতে পেরেছেন। নবুয়তের যুগে নবি-রাসুলগণ আল্লাহ্র দেওয়া মু‘জেজার মাধ্যমে মানুষকে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে এনেছিলেন। কারণ মু‘জেজা ছিল তাদের জন্য আল্লাহ্র পক্ষ থেকে দলিলস্বরূপ। তেমনিভাবে বেলায়েতের যুগে অলী-আল্লাহ্গণের কারামতের মাধ্যমে তা প্রকাশ পায়। যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের কাছে এসে অসংখ্য আশেকে রাসুল বিভিন্ন ধরনের বিপদ-আপদ বালা- মুছিবতে পড়ে প্রতিনিয়ত মহান মোর্শেদের দয়ায় আল্লাহ্র সাহায্য লাভ করেছেন। তেমনি একজন হলেন আশেকে রাসুল আফজাল হোসেন। তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে কীভাবে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেলেন, সেই ঘটনা এখানে উপস্থাপন করা হলো-


আশেকে রাসুল আফজাল হোসেন রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন নাসিরাবাদ ত্রিমোহনী এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি ট্রাক ড্রাইভিং পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এই পেশাটি যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি এখানে অনেক মানসিক চাপ থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বসবাস করতে হয়, যার ফলে বিভিন্ন ধরনের বদঅভ্যাস গড়ে উঠে। আর এরকম একটি বদঅভ্যাস আফজাল হোসেনের তরিকা গ্রহণের পূর্বে ছিল, আর তা হলো প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করা। ফলে তার প্রতি সপ্তাহে প্রচুর অর্থ ব্যয় হতো। নেশা করার ফলে তার পেটের ডান দিকে অনেক ব্যথা করত। এ কারণে তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তার পরীক্ষা করে জানান যে, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন। ডাক্তার তাকে ২ মাসের ঔষধ দেন এবং মদ্যপান ত্যাগ করতে বলেন।


আল্লাহ্র নুরের সত্তা থেকে সৃষ্ট নুরে মোহাম্মদীকে ধারণ করেই সর্বকালে সর্বযুগে নবি-রাসুল ও অলী-আল্লাহ্গণ হেদায়েতের মহান দায়িত্ব পালন করেন। ঐ প্রজ¦লিত প্রদীপ যখন যে মহামানব অর্থাৎ নবি-রাসুল এবং অলী-আল্লাহ্ হৃদয়ে ধারণ করেছেন, তখন ঐ মহামানবের সান্নিধ্যে গিয়ে সাধারণ মানুষ তাঁর প্রজ¦লিত প্রদীপের আলো দ্বারা নিজের হৃদয়কে আলোকিত করে মু’মিন হয়েছেন। সর্বযুগে মুু’মিন হওয়ার জন্যে এটাই খোদায়ী বিধান।
খিলগাঁও এলাকায় এক আশেকে রাসুল ভাইয়ের সাথে আফজাল হোসেনের পরিচয় হয়। তিনি তাকে নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক, মোহাম্মদী ইসলামের পূনর্জীবনদানকারী, আম্বিয়ায়ে কেরামের ধর্মের দায়িত্ব ও বেলায়েত লাভকারী সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের কাছে নিয়ে যান। সেখানে তিনি দয়াল বাবাজানের নিকট মোহাম্মদী ইসলামের সবক গ্রহণ করেন এবং তার সমস্যার কথা বলেন। আশেকে রাসুল আফজাল হোসেন যেন তার বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে পারেন, সেজন্য তিনি চেষ্টা ও আজিজি করতে থাকেন। এদিকে তার ডানদিকে ব্যথা কমার কোনো লক্ষণ দেখা গেলো না। তিনি পুনরায় ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঔষধ পরিবর্তন করে দিলেন এবং বললেন তার লিভারের অবস্থা ভালো নয়, যে কোনো সময় যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি ভয় পেয়ে যান এবং মহান আল্লাহ্র নিকট প্রার্থনা করতে থাকেন, যেন মোর্শেদের অসিলায় এই চরম বিপদ থেকে রক্ষা করেন। একদিন রাতে তিনি মহান মোর্শেদের অসিলা ধরে আল্লাহ্র কাছে রোনাজানি করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “হে দয়াল দরদি মাওলা! আপনি ছাড়া আমাকে বাঁচানোর আর কেউ নেই। আপনি দয়া করে আমাকে রক্ষা করুন, এই ব্যথা থেকে মুক্তি দান করুন।” এই বলে আজিজি করে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি ঐ দিন রাতে স্বপ্নে দেখেন মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান তার কাছে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে উঠাতে চাইলেন, কিন্তু মোর্শেদ তাকে ইশারায় না করলেন। তখন তিনি লক্ষ্য করলেন, মহান মোর্শেদের জ্যোতির্ময় চেহারা মোবারকের আলোয় পুরো ঘর আলোকময় হয়ে উঠেছে।
আশেকে রাসুল আফজাল হোসেন দয়াল বাবাজানকে সাদা পোশাক মোবারক পরিহিত অবস্থায় দেখতে পান। মহান মোর্শেদ দয়ার দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছেন। পরবর্তীতে মহান মোর্শেদ কেবলাজান তাকে দাঁড়িয়ে যেতে বললে তিনি দাঁড়িয়ে যান। মহান মোর্শেদ তার একদম কাছে চলে আসেন। তিনি তাঁর রূহানি ডান হাত মোবারক দিয়ে আফজাল হোসেনের পেটের যে জায়গায় ব্যথা করত, সেই স্থানে হাত দেন এবং সেখান থেকে টান দিয়ে কিছু বের করে দিয়ে বললেন, আর ব্যথা করবে না। যখন দয়াল বাবাজান তার পেটে টান দেন, তখন তার পুরো শরীরে কম্পন দিয়ে উঠে। বাবাজান চলে যাওয়ার পরে তার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। তিনি ঘুম থেকে উঠে অবাক হয়ে যান, যেখানে প্রতিদিন প্রচুর ব্যথা অনুভূত হতো, সেখানে তিনি কোনো ব্যথা অনুভব করছেন না।
তিনি পরবর্তীতে ডাক্তারের কাছে গেলেন এবং ব্যথা না করার ব্যাপারে ডাক্তারকে জানালেন। ডাক্তার তাকে কিছু পরীক্ষা দিলেন। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার অবাক হয়ে লক্ষ্য করে বললেন, যে ব্যক্তির কিছুদিন আগে লিভার সিরোসিস হয়েছিল, সে কীভাবে এত তাড়াতাড়ি পুরোপুরি ভালো হয়ে গেলো। ডাক্তার তাকে বললেন, আপনার জীবনে কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে, যার কারণে রাব্বুল আলামিন আপনার দিকে মুখ ফিরে তাকিয়েছেন। তিনি আপনাকে দুরারোগ্য এই রোগ থেকে রক্ষা করেছেন। তিনি তাকে প্রতিদিন যে ঔষধ দিয়েছিলেন, তা সব বন্ধ করে দিলেন, যার কারণে তার অনেক টাকার ঔষধ কেনা থেকে তিনি রক্ষা পেলেন। পরবর্তীতে দেখা গেল দয়াল বাবাজান তার পেটে যে স্থানে হাত দিয়েছিলেন, সেই জায়গায় গোল চিহৃ হয়ে রয়েছে। এতেই বোঝা যায়, আল্লাহর অলী বন্ধুগণ জগতের জন্য রহমতস্বরূপ। তাঁদের প্রতি ভক্তি-বিশ্বাস রাখলে, মানুষের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। মহান মোর্শেদের রূহানি দয়ার বদৌলতে তিনি লিভার সিরোসিসের মতো কঠিন রোগ থেকে রক্ষা পান। আশেকে রাসুল আফজাল হোসেন মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের কদম মোবারকে এসে ক্রন্দনরত অবস্থায় ঘটনাটি জানান। পরবর্তীতে তিনি মানত আদায় করে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন।
সংকলনে: আশেকে রাসুল শাহরিয়ার মাহমুদ চৌধুরী (অপু)

সম্পর্কিত পোস্ট