Cancel Preloader

একশ আশি জনের খাবার দু’হাজার পাঁচশত লোকে খেয়েছে

অলৌকিক কারামত
আশেকে রাসুল আনিছুর রহমান চৌধুরী, রংপুর জেলার পীরগাছা থানার অধিবাসী। তিনি বলেন ঘটনাটি ১৯৯৯ সালের ২৮ মার্চের। ঐ দিন রংপুর জেলার পীরগাছা থানার সাতদরগায় বাবে নাজাত দেওয়ানবাগ শরীফে যুগের ইমাম, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, আম্বিয়ায়ে কেরামের ধর্মের দায়িত্ব ও বেলায়েত লাভকারী, পূর্ণিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগীর জীবন্ত প্রতিচ্ছবি সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর আহ্বানে পিরানে পির, দস্তগির, সুলতানুল মাশায়েখ, সুলতানিয়া মোজাদ্দেদিয়া তরিকার ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ (রহ.)-এর ওফাত দিবস উপলক্ষ্যে আঞ্চলিক সূফী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।


সম্মেলনে মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজান নিজে উপস্থিত থেকে মহামূল্যবান বাণী মোবারক প্রদান শেষে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। দরবার শরীফের নিয়মানুযায়ী দুপুর ১২টার পূর্বেই আগত মেহমানদের মধ্যে তাবারুক বিতরণ শুরু করা হয়। মহান মোর্শেদের আখেরি মোনাজাতের সময় টিকিট বিতরণ ও তাবারুক প্রদান বন্ধ রাখা হয়। মোনাজাত শেষে দেখা গেল, কয়েক হাজার লোক টিকিট কাউন্টারের সামনে টিকিট নেওয়ার জন্য এবং কয়েক শ’ লোক তাবারুক খাওয়ার জন্য খাবার মাঠে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, অথচ সব তাবারুক ইতঃমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র এক পাতিল তাবারুক অবশিষ্ট আছে। অন্যদিকে কয়েক হাজার লোকের তাবারুক খাওয়া এখনও বাকী। অবস্থা বেগতিক দেখে খাবার মাঠ, পাকশালা ও টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা এবং স্থানীয় আয়োজক ভাইয়েরা যুগের ইমাম, বাবা দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের শরণাপন্ন হয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। ঘটনা শুনে আল্লাহর বন্ধু বললেন- “আমার মোর্শেদের ওফাত দিবসের অনুষ্ঠান, অথচ লোকজন না খেয়ে যাবে, তা হবে না। কেউ না খেয়ে যেতে পারবে না, আপনারা টিকিট দেওয়া শুরু করেন।” অতঃপর তিনি খাবার মাঠের কর্মীদের উদ্দেশে বললেন, যে পাতিলে তাবারুক রয়েছে, ঐ পাতিলের উপর ঢাকনা দিয়ে তাবারুক বিতরণ শুরু করুন। আগত সমস্ত লোকের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাতিলের ঢাকনা উত্তোলন করবেন না। এভাবে চালিয়ে যান আর দেখেন আল্লাহ্ কী করেন।


দেওয়ানবাগ শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মহান সংস্কারক যুগের ইমাম, বাবা দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর এরূপ নির্দেশ পেয়ে টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা টিকিট বিতরণ শুরু করলেন এবং খাবার মাঠের কর্মীরা আগত মেহমানদের খাবার মাঠে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাবারুক বিতরণ শুরু করলেন। আগত সমস্ত লোকের খাওয়া শেষ হতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সকলকে খাওয়ানো শেষে দয়াল দরদি বাবাজানকে জানানো হলো যে, সকল লোকের খাওয়া শেষ। তখন বাবাজান পাতিলের ঢাকনা উত্তোলনের হুকুম দিলেন। অতঃপর ঢাকনা উত্তোলন করে দেখা গেলো, আশ্চর্য! পাতিলের প্রায় সব তাবারুকই রয়ে গেছে, অথচ পাতিলের তাবারুক দিয়ে প্রায় দু’হাজার লোক খাওয়ানো শেষ। এই আশ্চর্য ও অলৌকিক ঘটনা দেখে সবাই আল্লাহর বন্ধুর কদম মোবারকে লুটিয়ে পড়ে বারবার শুকরিয়া আদায় করেন। এ সময় মহান মোর্শেদ নির্দেশ দিলেন পাতিলের বাকী তাবারুকগুলো দরবার শরীফের পার্শ্ববর্তী গ্রামবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণ করার জন্য। আমরা নির্দেশ মোতাবেক সাতদরগা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাবারুক বিতরণ সম্মন্ন করি। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, একটি পাতিলের তাবারুক দিয়ে সর্বোচ্চ একশ’ আশিজন লোক খাওয়ানো যায়, অথচ সেদিন প্রায় দু’হাজার লোককে খাওয়ানোর পরও পাতিলের প্রায় সব তাবারুকই অবশিষ্ট ছিল, যা পরবর্তীতে গ্রামবাসীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এভাবেই মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর বন্ধুর অসিলায় এক পাতিল তাবারুকে অফুরন্ত বরকত দান করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট