Cancel Preloader

ধর্মের আবির্ভাব এবং তার মৌলিকত্ব

ড. পিয়ার মোহাম্মদ
বিশ্ব জাহানের মহান স্রষ্টা ও প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহ্। সৃষ্টির আদিতে মহান আল্লাহ্ জাত-পাকে স্বমহিমায় অবস্থান করছিলেন। তিনি নিজেকে প্রকাশ করার ইচ্ছা করলেন। সে ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য তিনি তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে মানবজাতি সৃষ্টি করেন। সে মানুষকে তিনি সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবেও ঘোষণা করলেন। মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর সাথে সাথে জীবন চলার বিধি বিধানও তিনি ঠিক করে দিলেন। তিনি বললেন- ‘‘তোমরা যদি তোমাদের জীবনকালে আমার জারিকৃত নির্দেশাবলী মেনে চলো, তাহলে তোমাদের পরকালের জীবনে থাকবে অনন্তকালের অকল্পনীয় সুখ, শান্তি ও আনন্দময় জীবন এবং এর অমান্যকারীদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি ও তিরস্কার।” এ নির্দেশিত বিধি বিধানই ধর্ম এবং সৃষ্টির সে আদিলগ্ন থেকেই ধর্মের আবির্ভাব। আল্লাহ্ প্রদত্ত এ জীবন বিধান মানুষকে যুগ যুগ ধরে মুক্তির পথ প্রদর্শন করে আসছে। ধর্ম মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে, মানুষকে ন্যায়, সত্য, সুন্দর এবং কল্যাণের সন্ধান দেয়। মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজান বলেন, ‘‘ধর্ম বলতে এমন একটা স্বর্গীয় সুন্দরতম আদর্শ বা চরিত্রকে বুঝায়, যা পালনের মাধ্যমে শান্তি পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে, স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে বিরাজমান প্রকৃতিগত গভীর সম্পর্কই ধর্ম।”

যুগে যুগে মহান আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশনাবলী জগৎবাসীর নিকট বারবার তুলে ধরার জন্য অসংখ্য নবি-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাঁরা সে যুগের মানুষকে আল্লাহর পরিচয় লাভের পথ নির্দেশনা দিয়েছেন। নবির আদর্শ মেনে নেওয়াই ছিল সমকালীন মানুষের ধর্ম। যারা তাঁকে মেনে নিয়েছে তারা সঠিক পথে ছিল, আর যারা বিরোধীতা করেছে তারা বিপথগামী হিসেবে গণ্য হয়েছে। এভাবে যখন কোনো নবির নির্দেশিত পথে চলতে চলতে মানুষ নবির আদর্শ হারিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েছে, তখন নতুন নবি আবির্ভূত হয়ে প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাসের ভুলগুলো সংশোধন করে পুনরায় মানুষকে মুক্তির সঠিক পথ দেখিয়েছেন। এভাবে সৃষ্টির আদি থেকে সর্বশেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নবি-রাসুল পৃথিবীতে আগমন করে মানুষকে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। মানব ইতিহাসের প্রথম নবি হযরত আদম (আ.) তাঁর জাতির সামনে আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরেছেন। তারপর থেকে যত নবি-রাসুল আগমন করেছেন সবাই একইভাবে মহান আল্লাহর পরিচয় জাতির কাছে বর্ণনা করে তাঁর নির্দেশিত পথে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। সর্বশেষ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.) সকল নবি-রাসুলের প্রচারিত ধর্মকে পূর্ণতা দিয়ে গেছেন। এ সম্পর্কে আল কুরআনে এরশাদ হয়েছে- “আল ইয়াওমা আকমালতু লাকুম দিনাকুম ওয়া আতমামতু আলাইকুম নিইমাতি ওয়া রাদিতু লাকুমুল ইসলামা দ্বীনা।” অর্থাৎ আজ তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ সম্পন্ন করলাম, আর ইসলামকে তোমাদের ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলাম। (সুরা মায়িদাহ ৫ : আয়াত ৩)
হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবি হযরত রাসুল (সা.) পর্যন্ত সকল নবি-রাসুলই আল্লাহ্র ধর্ম ইসলামের প্রচারক ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহাম্মদ (সা.) নবি-রাসুলগণের প্রচারিত সেই ইসলামে প্রয়োজনীয় সংযোজন ও সংস্কার করে গেছেন। সেজন্যই আল কুরআনে পূর্বের নবি রাসুলদের কার্যক্রম এবং তাঁদের নানান পরিস্থিতি বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন নবি ও রাসুলদের শিরোমণি। তাঁর আগমনের পূর্বে সকল নবি-রাসুলই তাঁদের স্ব স্ব উম্মতের নিকট আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু হযরত রাসুল (সা.)-এর আবির্ভাবের শুভ সংবাদ দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন- “স্মরণ করুন! যখন আল্লাহ্ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন নবিদের কাছ থেকে যে যা কিছু আমি তোমাদের কিতাব ও হিকমত দিয়েছি এবং তোমাদের কাছে যা আছে, তার সত্যায়নকারীরূপে একজন রাসুল আসবেন, তখন অবশ্যই তোমরা তাঁর প্রতি ইমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে। অতপর তিনি (আল্লাহ্) বলেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে এবং এ সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কী তোমরা গ্রহণ করলে? তাঁরা বলল, আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেন- ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও সাক্ষী রইলাম।” (সূরা আলে ইমরান ৩ : আয়াত ৮১)। তাহলে আমরা সমাজে ধর্মের যে ভিন্নতা নিয়ে সব সময় আলোচনা সমালোচনা করে থাকি, তার খুব একটা সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। সবইতো আল্লাহ্ প্রেরিত ধর্ম এবং এসকল ধর্মের সত্যায়নকারী হিসেবে হযরত রাসুল (সা.)-কে প্রেরণ করা হয়েছে। মূলত সকল নবি-রাসুল একই সূত্রে গাঁথা। তাঁরা সকলেই বিশ্ব মানবতার কল্যাণেই আল্লাহর একত্ববাদের বাণী নিয়ে কাজ করে গেছেন। শবে মেরাজের রজনিতে দয়াল রাসুল (সা.) সকল নবি-রাসুলের ইমাম হিসেবে বায়তুল মুকাদ্দাসে নামাজ আদায় করেছেন। অন্যান্য নবি-রাসুল নবি বা রাসুল না হয়ে রাসুল (সা.)-এর উম্মত হতে পারলে সৌভাগ্যবান হতেন বলে মনে করেছেন। তাহলে তাদের ধর্মের মধ্যে পার্থক্য থাকে কীভাবে? কোথাও কোনো বিকৃতি ঘটলে সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু সব ধর্মের মর্মবাণী একই। ধর্মের মৌলিকতায় কোনো পার্থক্য দেখা যায় না।

পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- “তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে ধর্মে প্রতিষ্ঠিত করো। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ করো, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই এটাই সরল ধর্ম।” (সূরা আর রূম ৩০ : আয়াত ৩০) এ আয়াত থেকে বুঝা যায়, মহান আল্লাহ্ তাঁর ধর্মের কোনো পরিবর্তন করেন না। সেজন্য পৃথিবীতে যত ধর্ম রয়েছে, এর মধ্যে বাহ্যিক কিছু ভিন্নতা থাকলেও ধর্মের মৌলিক বিষয় এক। সব ধর্মই বলে সৎ পথে চল, সত্য কথা বল, পরোপকার কর, মানবতার পথে চল, মানুষের কল্যাণ করো। মানুষকে ভালোবাস, সমাজে সবাই মিলে মিশে থাক, পাপ থেকে দূরে থাক, পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়। তাহলে ধর্মের ভিন্নতা কোথায়? অনেকে বলে থাকেন যুগে যুগে অসংখ্য নবি-রাসুল আগমনের কারণে নানান ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে বিধায় মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব কলহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের বক্তব্য হলো- একজন নবি বা রাসুল পাঠিয়ে মানুষের করণীয় সম্পর্কে জানিয়ে দিলে এমন হতো না। মহান আল্লাহ্ যুগে যুগে সকল নবি রাসুলকেই আল্লাহর একত্ববাদের বাণী দিয়ে পাঠিয়েছেন। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে সকল নবি রাসুলই ইসলামের মর্মবাণী প্রচার করে গেছেন। সে মর্মবাণী যখন মানুষ এড়িয়ে চলতে শুরু করেছে, তখন একই বাণী নিয়ে আরেকজন নবি বা রাসুল প্রেরণ করেছেন। কাজেই নবি বা রাসুল অসংখ্য হলেও আল্লাহর বাণী এক। মহান আল্লাহ্ এক এবং সকল নবি-রাসুল তাঁর পক্ষ থেকেই বাণী নিয়ে প্রেরিত, কাজেই ধর্মে ভিন্নতা আসবে কি করে। ধর্মে মানব সৃষ্ট কোনো অধর্ম ঢুকে পড়লে সেটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রকৃতপক্ষে ধর্মকে পরিস্কারভাবে বুঝার চেষ্টা করলেই ধর্ম নিয়ে এসব বিতর্কের অবসান ঘটে যায়। ধর্মকে বুঝে পালন করলে কোনো সমস্যা হয় না কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান ছাড়া ধর্ম পালন করতে গেলেই সমস্যা হয়ে যায়। ধর্মের মূল আদর্শ বুঝা না গেলে এ ধরনের ভুল হওয়া স্বাভাবিক। ধর্মের শরিয়তে অবশ্যই কিছু ভিন্নতা আছে। এর কারণ হলো- ধর্মগ্রন্থগুলো ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় নাজিল হয়েছে। পরিভাষাগুলোও ভিন্ন ভিন্ন এবং একই বাক্যের ব্যখ্যা জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা বা বুঝার ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে দিয়ে থাকেন, সেজন্য কিছু ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ধর্ম মানুষের মাঝে সমস্যা সৃষ্টির জন্য আবির্ভূত হয়নি বরং সমস্যা সমাধানের জন্য ধর্ম এসেছে। সকল ধর্মের সৎকর্মশীল মানুষকে আল্লাহ্ পুরস্কৃত করবেন। পবিত্র কুরআনে এসেছে, “যারা বিশ্বাস করে, যারা ইহুদি, খ্রিষ্টান ও সাবইন, যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রতিপালকের কাছে: তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দু:খিত হবে না।’’ (সূরা আল বাকারাহ ২ : আয়াত ৬২)। এতে বুঝা যাচ্ছে- যে কোনো ধর্মের লোক মহান আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ করে তাঁর বিধান মতো চললে, মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হবেন। আসল বিষয়টি হলো মহান আল্লাহর বিধান পালন। যিনি এ বিধান সঠিকভাবে পালন করবেন তিনিই মুক্তি পেতে পারেন। এটিই ধর্মের মূল কথা।

মহান আল্লাহ্ তাঁর ধর্ম প্রচারের জন্যই নবি-রাসুলগণকে প্রেরণ করেছেন। সে কারণে এসব মহামানবকে অনুসরণ করাই ধর্মের বিধান। যখন থেকে মানুষ এসব মহামানবের আদর্শ থেকে বাহ্যিক আচরণের পিছনে ছুটতে শুরু করেছে, তখন থেকেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে বিশ্ব নবি হযরত রাসুল (সা.) পর্যন্ত সকল নবি ও রাসূল ক্বালবের জ্ঞানে জ্ঞানী ছিলেন। সেই পথ হচ্ছে সাধনার পথ। যুগে যুগে মহামনবগণ মানুষের চরিত্র সংশোধন করার জন্যই এসেছিলেন। কাজেই যেসব কাজ মানুষের চরিত্র সংশোধনের সাথে সম্পৃক্ত নয়, সে সব বিষয় নিয়ে অযথা বিতর্ক করে লাভ কি? দুজন একই আদর্শের মানুষ ভিন্ন কাপড় পরিধান করলে যেমন তাদের ভিন্ন আদর্শের মানুষ বলা যায় না, তেমনি মূল বিষয় ঠিক থাকলে শুধু মাত্র বর্ণনার ভিন্নতাকে ভিত্তি ধরে বিরোধীতা করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ধর্ম সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান ছাড়া ধর্ম বুঝা খুবই দুরূহ। হযরত রাসুল (সা.) নিজেই বলেছেন- “আস শারীয়াতু আকওয়ালী, ওয়াত্তারীক্বাতু আফ’আলী ওয়াল হাকীকাতু আহ্ওয়ালী ওয়াল মা’রিফাতু আসরারী।’’ অর্থাৎ শরিয়ত আমার কথা, তরিকত আমার কাজ, হাকিকত আমার অবস্থা এবং মারিফত আমার নিগূঢ় রহস্য। তাহলে স্পষ্ট যে, ধর্মের চারটি অংশ। এ চারটি অংশ যিনি বুঝেন বা মানেন, তিনিই ধর্ম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখার দাবী করতে পারেন। ধর্মের সকল শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করতে না পারলে প্রকৃত জ্ঞানের অভাবে বিভিন্ন সমস্যা পুঞ্জিভুত হয়ে চরম রূপ নিতে পারে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি বিষয়ের যে জাহেরী ও বাতেনি দিক আছে, তা বেশিরভাগ লোকই বুঝতে চান না। আর বুঝতে চান না বলেই আমরা নিজ নিজ জ্ঞান ও ধারণার বশবর্তী হয়ে কথা বলি, আর যারা প্রকৃত জ্ঞানী তারা বিতর্ক এড়িয়ে চলেন।

যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানের বলেন- সকল নবি ও রাসুলের ধর্ম এক। নবি-রাসুলগণ পরষ্পর ভাই ভাই। সে কারণে সবাই আল্লাহর নির্দেশনা প্রচার করে গেছেন। শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্য ক্ষেত্র প্রস্তত করে গেছেন পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণ। কাজেই আদি খেকে শেষ পর্যন্ত আগত সকল নবি রাসুলের ধর্ম বিদ্যমান আছে। এসব ধর্মের অনুসারীগণ যদি হযরত রাসুল (সা.)-এর সংস্কারগুলো সংযোজন করে তাদের ধর্ম সঠিকভাবে পালন করে যান, তাতেও তারা মুক্তি পেতে পারেন। অন্যান্য নবি-রাসুলগণ তাদের উম্মতদের রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে শাফায়েতের ব্যবস্থা করবেন। তিনি এ নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব না করে শান্তির ধর্ম পালনের আহ্বান জানান। মহান মোর্শেদ দয়াল বাবাজানের কদম মোবারকে ফরিয়াদ, আমরা যেন তাঁর নির্দেশনা মোতাবেক ধর্মের নিগুড় রহস্য বুঝে সকল ধর্মের মানুষের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তষ্টি অর্জন করে নাজাত পেতে পারি। আমিন।

সম্পর্কিত পোস্ট