Cancel Preloader

যাঁকে পেয়ে ধন্য জীবন

অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান মিয়া
(পর্ব-৩৩)

কলকাতায় চিফ ইঞ্জিনিয়ারের আসনে সূফী সম্রাট
আল্লাহর প্রিয় হাবিব হযরত রাসুল (সা.)-এর বহু অলৌকিক মু‘জিজা ছিল, যা দেখে মুসলমানগণ যেমন আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন এবং বহু ইহুদি ও খ্রিষ্টান ইসলাম গ্রহণ করেছে। অনুরূপভাবে রাসুল (সা.)-এর উত্তরসূরি হিসেবে যে সকল অলী-আল্লাহ্ জগতে আবির্ভূত হয়েছেন, তাঁদেরও বহু অলৌকিক কারামত আছে। এক কথায় বলা যায় যে, মু‘জিজা হলো নবি-রাসুলগণের জন্য আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট স্বরূপ। অনুরূপভাবে অলী-আল্লাহ্গণ যে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে মনোনীত, তার প্রমাণ বা সার্টিফিকেট হচ্ছে অলৌকিক কারামত। যে ব্যক্তির মাধ্যমে অলৌকিক কারামত সংঘটিত হয়, তিনিই খাঁটি অলী-আল্লাহ্। আর যার কোনো অলৌকিক কারামত নেই, সে নিজেকে যতই অলী-আল্লাহ্ দাবী করুক না কেন, সে অলী-আল্লাহ্ নয়।


আল্লাহ্র মহান বন্ধু, যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান এমন একজন মহামানব, যাঁর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মানুষের জীবনে অলৌকিক কারামত সংঘটিত হচ্ছে। ২০০৩ সালের ঘটনা। ভারতের কলকাতার খিদিরপুরে জনাব মো. সালাহউদ্দিন একজন ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে সরকারি চাকুরিতে নিয়োজিত। তিনি আমাকে জানিয়েছেন- একবার কর্তব্যে অবহেলা ও ত্রুটির অভিযোগে কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন এবং শোকজ নোটিশ জারি করেন। জনাব মো. সালাহউদ্দিন শোকজের জবাব দিলে কর্তৃপক্ষ তাতে সন্তুষ্ট হননি। ফলে আস্তে আস্তে অবস্থাটা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, তার চাকুরি যে কোনো মুহূর্তে চলে যেতে পারে। এমতাবস্থায়, তিনি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লেন। কারণ চাকুরি চলে গেলে তার জীবনে নেমে আসবে চরম দুর্ভোগ। এ কঠিন পরিস্থিতিতে তার মনে পড়ে গেল আল্লাহ্র মহান অলী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুরের কথা, কিন্তু তিনি হুজুর কেব্লাজানকে জাহেরিভাবে দেখেননি। কলকাতার খিদিরপুরে আশেকে রাসুল শরীফ ভাইয়ের বাসায় খানকাহ শরীফে দয়াল বাবাজানের ছবি মোবারক রয়েছে। জনাব মো. সালাহউদ্দিন ঐ ছবি মোবারক দেখেই দয়াল বাবাজানকে বিশ্বাস করে তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে তরিকা গ্রহণ করে মোহাম্মদী ইসলামের অনুসারী হন। তাঁর চাকুরির বিষয়টি কঠিন পর্যায়ে পৌঁছে গেলে তিনি অত্যন্ত চিন্তিত মনে একদিন খানকাহ শরীফে এসে সূফী সম্রাটের ছবি মোবারক স্পর্শ করে অঝোর নয়নে কাঁদতে থাকেন। আর আজিজি করে বলতে থাকেন-ওগো দয়াল বাবাজান! আপনিতো একজন মহান অলী-আল্লাহ্। আমি আপনার একজন সামান্য ভক্ত মুরিদ। আপনাকে সরাসরি না দেখেই একজন শ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ্ হিসেবে বিশ্বাস করেছি। আজ আমি চরম বিপদে পড়েছি, আপনি দয়া করে আমার বিপদ দূর করে দিন এবং আমার চাকুরিটা রক্ষা করুন। আমি বিশ্বাস করি-আপনি দয়া করলেই আমার চাকুরি টিকে যাবে। এভাবে বেশ কয়েকদিন চলে যাওয়ার পরে নির্দিষ্ট দিনটি এসে গেল। সেদিনই চূড়ান্ত হবে মো. সালাহউদ্দিনের ভাগ্য। তার চাকুরি থাকবে, নাকি তাকে অভিযুক্ত হয়ে চাকুরি হারাতে হবে। অফিসের চিফ বস, চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দফতরে কর্তৃপক্ষের প্রায় সকলেই উপস্থিত হয়েছেন। সেদিন বিভাগীয় বিচারকদের সামনে অফিসের এক প্রান্তে জনাব মো. সালাহউদ্দিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নীরবে আপন মোর্শেদ সূফী সম্রাট দয়াল বাবাজানকে স্মরণ করে চোখের পানি ফেলছেন, আর বলছেন- ওগো দয়াল বাবাজান! আপনি দয়া করে আমাদের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ারে বসে রায় ঘোষণা করে আমাকে বিপদ থেকে রক্ষা করুন। আর কে আছে যে, আমাকে আজকের এই চরম বিপদ থেকে বাঁচাবে, আমার চাকুরি রক্ষা করবে?


মনে মনে একথা বলার কিছুক্ষণের মধ্যেই আশেকে রাসুল মো. সালাউদ্দিন ভাই দেখতে পেলেন- সত্যি সত্যিই সূফী সম্রাট দয়াল বাবাজান চিফ ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ারে বসে রয়েছেন। মহান মোর্শেদ দয়াল বাবাজানকে দেখতে পেয়ে তিনি যেন হতবাক। তিনি নীরবে অঝোর নয়নে কাঁদছেন আর ভাবছেন, হায়রে! এখন যদি আমাদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সাহেব চলে আসেন, তাহলে তো দয়াল বাবাজান আর চেয়ারে বসে থাকবেন না। তখন বাবাজান কোথায় বসবে, আর আমারই বা কী হবে? একথা ভাবতে ভাবতে একটু পড়েই জনাব মো. সালাহউদ্দিন দেখেন যে, দয়াল বাবাজান আর চেয়ারে বসা নেই, চেয়ার খালি রয়েছে। খানিকক্ষণ পরেই চিফ ইঞ্জিনিয়ার এসে ঐ চেয়ারে বসলেন। আশেকে রাসুল মো. সালাউদ্দিন ভাবতে লাগলেন- দয়াল বাবাজান যখন অলৌকিকভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আমাদের অফিসে এসেছেন, নিশ্চয়ই তিনি আমাকে দয়া করবেন। একথা ভাবতে ভাবতেই তিনি চিফ ইঞ্জিনিয়ার বলতে লাগলেন- সালাহউদ্দিন! তোমার কোনো ভয় নেই। তোমার চাকুরি যাবে না। আমি তোমার পক্ষে আছি। তবে তোমাকে আমি আর একটি কাজ দিচ্ছি, যা করতে তোমার কয়েকদিন সময় লাগবে। চিফ ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের দেওয়া সাময়িক দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে আশেকে রাসুল মো. সালাহ উদ্দিন তাঁর অফিসের পূর্বের দায়িত্বে ফিরে আসেন। আশেকে রাসুল মো. সালাহউদ্দিন একথা আমাকে বলার সময় বারবার দয়াল বাবাজানের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
[লেখক: সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল, জাতীয় আইন কলেজ, ঢাকা]

সম্পর্কিত পোস্ট