Cancel Preloader

সারা বিশ্বে একই তারিখে ঈদ ও ইসলামি অনুষ্ঠান উদযাপন করার পদ্ধতি প্রণয়ন


ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম
প্রকৃতি তার আপন নিয়ম মেনে চলে। বিশ্বের সব বিছুর একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম নীতি আছে। চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, তারা জিন, ইনসান তার বাইরে নয়। স্রষ্টার সৃষ্টি হাজার হাজার মাখলুকাত। এ মাখলুকাতের মাঝে শ্রেষ্ঠ হলো আশরাফুল মাখলুকাত তথা মানুষ। মানুষ সব কিছুর থেকে শ্রেষ্ঠ হওয়ার কারণ হলো মহান প্রভু দয়া করে বিবেক, মেধা, প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি দিয়েছে, যা অন্য কোনো মাখলুকাতকে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ৭০০ কোটির উপরে মানুষ। এর মধ্যে প্রায় ১৫০ কোটির অধিক মুসলমান। মুসলমানদের ধর্ম হলো ইসলাম। ইসলাম অর্থ শান্তি। আর মুসলমান হলো শান্তিতে বসবাসকারী। আমরা মুসলমানরা কি আজ শান্তিতে আছি? আমাদের শান্তি বিনষ্ট হলো কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে আমরা পাবো স্বধর্মীদের অজ্ঞতা ও বিধর্মীদের ষড়যন্ত্রের কারণে ধর্মের মূলকে ছেড়ে ভুলকে আঁকড়ে ধরেছি।
সারা পৃথিবীতে সূর্য একটা, চন্দ্র একটা, বিশ্বের সকল মানুষ স্বীকার করে, আমাদের প্রভু একজন। সকল মুসলমান স্বীকার করে হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের রাসুল। আমাদের ধর্ম এক। আমাদের কেব্লা এক, পবিত্র কুরআন এক। ভৌগলিক সীমারেখার কারণে আমাদের একেকজনের একেক দেশে বসবাস। দেশভেদে সীমরারেখার কারণে আমাদের চন্দ্র, সূর্য কি একাধিক হতে পারে? যদি একাধিক না হয় তাহলে মুসলমানরা কেন ঈদসহ অন্যান্য ইসলামি অনুষ্ঠান একই দিন পালন না করে একদিন আগে বা একদিন পরে করে থাকে? তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো সঠিক দিনে পালন না করার কারণে মহান আল্লাহর রহমত হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে করে মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট হচ্ছে। অথচ পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন- “তোমরা আল্লাহর রজু (রশি) মজবুত করে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” (সূরা আলে ইমরান ৩: আয়াত ১০৩)
ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, একই ধর্মানুষ্ঠান বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্নদিনে, এমনকি একই দেশে কেউ একদিন আগে, কেউ একদিন পরে পালন করে, এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। রমজান মাস শুরু এবং শেষে ঈদ উদযাপন নিয়ে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। রমজানে দিনের বেলায় পানাহার করা হারাম এবং ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম এই হারাম কাজটি কেউ না কেউ করছি। আমরা জানি ১০ মহররম শুক্রবার কেয়ামত হবে। চাঁদের তারিখের তারতম্যের কারণে এক দেশে কেয়ামত হবে, অন্যদেশ কি কেয়ামতের জন্য এক দুই দিন অপেক্ষা করবে?
হযরত রাসুল (সা.) বলেন- ‘‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ করো। অর্থাৎ ঈদ করো। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে শাবান মাসের দিনের সংখ্যা ত্রিশ পূর্ণ করো।’’ (বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৫৬)
হযরত রাসুল (সা.)-এর এই হাদিসের অর্থ অনেকে ভুল ব্যাখ্যা করে দেশের সীমানায় চাঁদ দেখার অজুহাত তোলে। এই হাদিস এর অর্থ কি প্রত্যেক মুসলমানকে চাঁদ দেখতে হবে? মেরু অঞ্চলে যেখানে ৬ মাস দিন, আর ৬ মাস রাত সেখানে এর সমাধান কী হবে? যে লোক জন্মান্ধ তার জন্য কি রোজা ফরজ হবে না? এই প্রসঙ্গে হযরত আবদুুর রহমান ইবনে জায়েদ (রা.) হতে বর্ণিত- ‘‘নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যদি মুসলমানদের দুজন সাক্ষ্য দেয় নতুন চাঁদ উদয়ের ব্যাপারে, তাহলে তোমরা রোজা ও ঈদ পালন করো। (নাসাঈ সহীহ, অধ্যায় ৮) বিজ্ঞানের এই উন্নত যুগে আমরা কয়েক মিনিটের ব্যবধানে জানতে পারি আরব দেশগুলোর চাঁদ দেখার খবর। আমাদের আলেম সমাজ কি আরব দেশে যারা চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিলো তাদেরকে বিশ্বাস করতে পারে না? নাকি নিজস্ব মতাদর্শ প্রচলনের মাধ্যমে নিজেকে বড়ো বুজুর্গ প্রকাশ করতে চান। আরবে দিন দিন মুসলমান সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিভিন্ন দেশে ইসলাম প্রসারিত হওয়ার মুসলমানরা যাতে সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে ধর্মকর্ম করতে পারে, সেজন্য হযরত রাসুল (সা.) তার শেষ জীবনে চান্দ্র মাস গণনার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সারা বিশ্বের সকল মুসলমান একই রাসুলের উম্মত যদি হই, তাহলে ঈদ কেন দুই দিনে হবে? সারা বিশ্বের জন্য চাঁদ একটি। তাই পৃথিবীর চাঁদের তারিখও একটি হওয়া যুক্তিসঙ্গত। এই প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন- ‘‘তারা আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, বলুন তা মানুষের সময়সীমা নির্ধারণ ও হজ এর জন্য।’’ (সূরা বাকারাহ ২: আয়াত ১৮৯)
চাঁদ যখন উদিত হবে, যে কোনো স্থান থেকে প্রথম চাঁদ দেখা যাবে, সেদিন থেকে চাঁদের ১ তারিখ গণনা করতে হবে। পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে চাঁদ দেখে ভিন্ন ভিন্ন চাঁদের তারিখ নির্ধারণ করার বিষয়টি শরিয়ত পরিপন্থি। সারা বিশ্বে একই তারিখে ঈদ পালন প্রসঙ্গে হানাফি মাজহাবের ইমাম হযরত আবু হানিফা (রহ.)-এর অভিমত বর্ণনা করতে গিয়ে ফতোয়ায়ে আলমগীরিতে বলা হয়েছে- ‘‘উদয়স্থল এলাকা বা রাষ্ট্র বিবেচনার বিষয়বস্তু হবে না। চন্দ্র উদয়ের ব্যপারটি শুধু বিবেচ্য হবে।’’ ফতোয়ায়ে কাজীখানে উল্লেখ রয়েছে ফকিহ আবু লাইস ও সামসুল আইম্মা ছানাওয়ানী- এরূপ ফতোয়া প্রদান করেছেন- ‘‘যদি পশ্চিম দেশীয় লোক রমজানের চাঁদ দর্শন করে তবে পূর্ব দেশীয় লোকদের উপর রোজা রাখা ওয়াজিব হয়ে যাবে।’’ সারা বিশ্বে একই তারিখে ঈদ ও ইসলামী অনুষ্ঠান পালন করার স্বপক্ষে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের কিছু তথ্য তুলে ধরলাম। এবার ভৌগলিক পৃথিবীর একটি গাণিতিক তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার সাহায্যে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের সময়ে পার্থক্য।
গ্রিনিচের দ্রাঘিমা ০০। গ্রিনিচের মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিম কোনো স্থানের কৌনিক দুরত্বকে ঐ স্থানের দ্রাঘিমা বলে। পৃথিবীর পরিধি দ্বারা উৎপন্ন কোণ ৩৬০০। মূল মধ্যরেখা এই ৩৬০০ কে ১০ অন্তর অন্তর সমান দুই ভাগে অর্থাৎ পূর্ব ও পশ্চিমে ১৮০০ করে ভাগ করেছে। দ্রাঘিমা রেখার নিয়মানুসারে মূল মধ্যরেখা থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে অগ্রসর হলে প্রতি ১০ দ্রাঘিমার পার্থক্যের জন্য ৪ মিনিট সময়ের ব্যবধান হয়। আমরা জানি ০০ দ্রাঘিমার ঠিক উল্টো দিকে ১৮০০ পূর্ব ও পশ্চিমে দ্রাঘিমারেখা যেহেতু প্রতি ১০ জন্য ৪ মিনিট, সেহেতু ১৮০০ এর জন্য (১৮০ী৪)=৭২০ মিনিট অর্থাৎ ১২ ঘন্টার পার্থক্য হয়।
গ্রিনিচে ০০ দ্রাঘিমায় সকাল ৬টা হলে তার বিপরীত দিকে ১৮০০ দ্রাঘিমায় সময় হবে সন্ধ্যা ৬টা। ১৫০০ পূর্ব দ্রাঘিমায় বিকাল ৪টা হলে বিপরীতে পশ্চিমে ৩০০ দ্রাঘিমায় সময় হবে ভোর ৪টা। ১২০০ পূর্ব দ্রাঘিমায় দুপুর ২টা হলে তার বিপরীত পশ্চিমে ৬০০ দ্রাঘিমায় সময় হবে রাত ২টা। এভাবে আমরা দেখতে পাই ০০+১৮০০=১৮০০, ১৫০০+৩০০=১৮০০, ১২০০+৬০০=১৮০০, ৯০০+৯০০=১৮০০ সকলক্ষেত্রে দ্রঘিমার যোগফল ১৮০০ এবং সময়ের পার্থক্য ১২ ঘণ্টা। এই থেকে প্রতিয়মান হয় যে, পৃথিবীর একপ্রান্ত হতে অপর প্রান্তের সময়ের পার্থক্য সর্বোচ্চ ১২ ঘন্টা। এই সময়ের ব্যবধানে আমরা এক তারিখে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে চাই। এক কিংবা দুই দিন পরে নয়। আমেরিকায় যেদিন শুক্রবার জুমার নামাজ পড়া হয়, ঠিক সেইদিন শুক্রবার বাংলাদেশে ও জুমার নামাজ পড়া হয়, তবে একই সময়ে নয়, একই দিনে ১২ ঘন্টা আগে বা পরে।

প্রিয় পাঠক, পৃথিবীর প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী জাতির নিজস্ব পঞ্জিকা রয়েছে। তারা নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি সেই পঞ্জিকা অনুযায়ী পালন করে থাকে। মুসলিম জাতিও এর বাহিরে নয়। ইসলামের ২য় খলিফা আমিরুল মু’মিনিন হযরত ওমর ফারুক (রা.)-এর খেলাফতকালে সরকারি কাজ কর্মে সুষ্ঠু রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য তিনি চন্দ্রবর্ষ গণনার একটি পদ্ধতি প্রণয়ন করেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর হিজরতের ঘটনাটি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় পঞ্জিকার নামকরণ করেন হিজরি পাঞ্জিকা। হযরত ওমর ফারুক (রা.) কর্তৃক পঞ্জিকা প্রবর্তনের ইতিহাস Encyclopedia fo Britanica-এ উল্লেখ আছে।
জগত সৃষ্টির সূচনালগ্ন হতে মহান রাব্বুল আলামিন পৃথিবীর পথভোলা মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য মহামানব প্রেরণ করেছেন। নবুয়তের যুগে এসব মহামানবকে নবি-রাসুল এবং নবুয়ত পরবর্তী বেলায়েতের যুগে এসব মহামানবকে আওলিয়ায়ে কেরাম বলা হয়। পাপ সংকুল পৃথিবীতে বিধর্মীদের ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে সুজলা, সুফলা শস্য শ্যমল এই সোনার বাংলায় শান্তি ও মুক্তির বাণী নিয়ে আগমন করেছিলেন মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলা। আল্লাহর এই মহান অলীর সংস্পর্শে এসে আত্মশুদ্ধি করে, ক্বালবি জ্বিকির অর্জন করে আশেকে রাসুল হয়ে অসংখ্য মানুষ দয়াল রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভ করেছে। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ধর্মে প্রবিষ্ট অনেক ভুল সংশোধন করে জামানার মোজাদ্দেদরূপে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এই মহামানবের অসংখ্য ধর্মীয় সংস্কারের মধ্যে অন্যতম একটি হলো- ‘সারা বিশ্বে একই তারিখে ঈদ ও ইসলামি অনুষ্ঠান উদযাপন করার পদ্ধতি প্রণয়ন।’ এর স্বপক্ষে তিনি হযরত ওমর ফারুক (রা.) কর্তৃক প্রবর্তিত ও আদিম চান্দ্র পঞ্জিকা সংগ্রহ করে পুনঃপ্রর্বতন করেন। হযরত ওমর ফারুক (রা.) কর্তৃক প্রণীত গণনা ভিত্তিক চান্দ্র পঞ্জিকা হিসাব পদ্ধতি সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো-
আট বছর চক্রের ছক
বছর মেয়াদকাল গণনাকৃত দিন অবশিষ্ট সময় মন্তব্য
১ম ৩৫৪ দিন ৯ ঘন্টা ৩৫৪ দিন ৯ ঘন্টা
২য় ’’ ৩৫৪ দিন ৯+৯=১৮ ঘন্টা
৩য় ’’ ৩৫৪+১=৩৫৫ দিন ১৮+৯=২৭-২৪=৩ ঘন্টা লিপ ইয়ার
৪র্থ ’’ ৩৫৪ দিন ৩+৯=১২ ঘন্টা
৫ম ’’ ৩৫৪ দিন ১২+৯=২১ ঘন্টা
৬ষ্ঠ ’’ ৩৫৪+১=৩৫৫ দিন ২১+৯=৩০-২৪=৬ ঘন্টা লিপ ইয়ার
৭ম ’’ ৩৫৪ দিন ৬+৯=১৫ ঘন্টা
৮ম ’’ ৩৫৪+১=৩৫৫ দিন ১৫+৯=২৪-২৪=০ ঘন্টা লিপ ইয়ার

মাস গণনার নিয়ম:
১। মাসগুলো ক্রমান্বয়ে ৩০ ও ২৯ দিনে ধরতে হবে।
২। রমজান মাসকে ৩০ দিন ধরে পূর্বে ও পরবর্তী মাসসমূহের দিনের সংখ্যা নির্ধারিত হবে।
৩। লিপ ইয়ার বর্ষগুলো অর্থাৎ ৩য়, ৬ষ্ঠ ও ৮ম বর্ষে জ্বিলহজ মাস ২৯ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিন ধরতে হবে।
বছর গণনার নিয়ম:
১। হিজরি সনের বর্ষ সংখ্যা বা বর্ষ ক্রমিক নির্ণয়ের জন্য হিজরি সনের সংখ্যাকে ৮ দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগ শেষে ‘শূন্য’ হলে ঐ হিজরি সনের ক্রমিক হবে ৮ম বর্ষ। অন্যথায় ভাগ শেষের সংখ্যাই ঐ হিজরি সনের ক্রমিক হবে। অর্থাৎ যদি ১ অবশিষ্ট থাকে তবে ১ম বর্ষ, যদি ২ অবশিষ্ট থাকে তবে ২য় বর্ষ ইত্যাদি।
২। ১ম বর্ষের ১ম দিন অর্থাৎ ১ মহররম সোমবার ধরে বর্ষ গণনা অব্যাহত রাখতে হবে।
দীর্ঘকাল যাবৎ মুসলিম বিশ্বের বিরাজমান ঈদ সমস্যা সমাধানের জন্য অষ্ট বর্ষচক্র চান্দ্র পঞ্জিকা সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলা উদ্ভাবন করেন। এ পঞ্জিকা ইসলাম সম্মত, বিজ্ঞানভিত্তিক অথচ সহজ ও কার্যকরি বলে সুধি মহলে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। ২১ অক্টোবর, ১৯৯৫ সাল হতে ৮ নভেম্বর ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি) এর আংকারা ভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান ও সামাজিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Statistical Economic and Social Research and Training Centre)–এর উদ্যেগে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে আয়োজিত এক সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের দেশের প্রতিনিধিদের সম্মুখে এ অষ্টবর্ষ চান্দ্রপাঞ্জিকার রূপরেখা তুলে ধরা হয়। যুগযুগান্তরের চান্দ্র গণনার ও সমস্যা সমাধান করার জন্য অষ্টবর্ষ চান্দ্রপঞ্জিকা তারা সাদরে গ্রহণ করেন এবং এটি কার্যকর করার ব্যাপারে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণে ও.আই.সি (OIC) ভুক্ত সকল দেশে চিঠি প্রেরণ করা হয়। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হলো আমাদের আলেম সমাজ আজও এর পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো যুক্তি না দিয়ে তাদের মনগড়া নিয়মে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন।
আমরা জানি মহামানবগণ তাঁদের মনগড়া কোনো কথা বলেন না। সূফী সম্রাটের এই যুগান্তকারী সংস্কার অচিরেই বাস্তবায়ন হবে এবং মুসলমানদের ঐক্য ফিরে আসবে। সঠিক সময়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে মুসলমানরা আল্লাহর অশেষ ফায়েজ বরকত ও রহমত লাভ করবে। আমিন।
[লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক]

সম্পর্কিত পোস্ট