মহামানবগণ কুরআনের বাস্তব চরিত্র ধারণকারী
ইমাম প্রফেসর ড. আরসাম কুদরত এ খোদা
পবিত্র কুরআন মহান আল্লাহ্র বাণী ও মানবজাতির পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য কুরআন পাঠ ও তা পালন করা এবং সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করা ফরজ। কিন্তু পালন করার পূর্বে পবিত্র কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা অনুধাবন করা উচিত। রাহ্মাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.) মুসলিম জাতিকে কুরআনের আলোকে জীবন ব্যবস্থা ও ইসলামি আদর্শে আদর্শবান এবং সভ্য জাতিতে পরিণত করেছিলেন। যার কারণে সারা বিশ্বে আজ ১৭০ কোটি মুসলমান। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এক শ্রেণির মুসলমান পবিত্র কুরআনের অপব্যাখ্যা করছে। ফলে বর্তমানে তারা নিজেদের মধ্যে হানাহানি, ইসলামের নামে জঙ্গী বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। মূলত মহাগ্রন্থ কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ না করার কারণে মুসলিম জাতির আজ এত অধঃপতন। কিন্তু বুঝার বিষয় হচ্ছে, পবিত্র কুরআন আল্লাহ্র বাণী আর আল্লাহ্র এই বাণীর ব্যাখ্যা তিনিই করতে পারেন, যাঁর সাথে মহান আল্লাহ্র যোগাযোগ রয়েছে। নবুয়তের যুগে আল্লাহ্র সাথে যাঁদের যোগাযোগ ছিল তাঁদেরকে নবি-রাসুল, আর বেলায়েতের যুগে আল্লাহ্র সাথে যাঁদের যোগাযোগ রয়েছে তাঁদেরকে অলী-আল্লাহ্ বলা হয়। অলী-আল্লাহ্গণ এলমে শরিয়ত, এলমে তরিকত, এলমে হাকিকত ও এলমে মারেফত এই ৪টি বিদ্যায় বিদ্বান। তাঁরাই মোর্শেদ বা পথ প্রদর্শক। যিনি শুধু একটি বিদ্যায় বিদ্বান, তিনি মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে পারেন না। অলী-আল্লাহ্গণ সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ্র চরিত্রে চরিত্রবান হন এবং আল্লাহ্র গুণে গুণান্বিত হয়ে থাকেন। মূলত তাঁদের নিকটই কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পাওয়া সম্ভব। এই প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে- “তাখাল্লাকু বি আখলাকিল্লাহ্।” অর্থাৎ- তোমরা আল্লাহ্র চরিত্রে চরিত্রবান হও। (সূত্র- শরহে আকীদাতু তাহাবিইয়্যাহ, ১ম খণ্ড, ১৭৭ পৃষ্ঠা) পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে “আমরা গ্রহণ করলাম আল্লাহ্র রং। আল্লাহ্র রং-এর চেয়ে উত্তম রং আর কার হতে পারে?” (সূরা বাকারা ২: আয়াত ১৩৮)
কেবলমাত্র কুরআন মুখস্থ বা পাঠ করে যদি তার সঠিক ব্যাখ্যা বা অর্থ না বুঝা যায়, তাহলে সেই কুরআন মানুষকে আল্লাহ্র চরিত্রে চরিত্রবান করতে পারে না। কিন্তু সেই কুরআনের চরিত্রে চরিত্রবান এমন একজন মহামানবের সান্নিধ্য লাভ করতে পারলে মানুষ কুরআনের আলোকে নিজেকে আলোকিত করতে সক্ষম।
মহান আল্লাহ্ আদি পিতা হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত রাসুল (সা.) পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৪ হাজার নবি-রাসুল এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ্ তাঁর প্রেরিত বন্ধুদের মাধ্যমে মানবজাতির হেদায়েতের জন্য ৪টি আসমানি কিতাব (তাওরাত, জাবুর, ইন্জিল ও কুরআন) ও ১০০টি ছহিফা নাজিল করেছেন। উল্লেখ্য যে, শুধুমাত্র ছহিফা বা কিতাবই যদি মানুষকে শান্তির চরিত্র ও মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারতো, তাহলে আল্লাহ্ তায়ালা পৃথিবীতে নবি-রাসুল পাঠাতেন না। নবি-রাসুলগণকে প্রেরণ করার উদ্দেশ্য হলো তাঁরা যেন আল্লাহ্র সেই বাণীর সঠিক ব্যাখ্যা করে মানুষকে আল্লাহ্র পথে পরিচালিত করতে পারেন। মূলত কিতাব মানুষকে হিদায়েত করতে পারে না, বরং হিদায়েতের জন্য মোর্শেদের সহবতে গিয়ে তাঁর শিক্ষানুযায়ী আমল করা অত্যাবশ্যক। এই প্রসঙ্গে হযরত জিয়াদ ইবনে লবীদ (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন একদা হযরত রাসুল (সা.) একটি বিষয় আলোচনা করছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, “এটি এলেম বিলুপ্ত হওয়ার সময় সংঘটিত হবে। তখন আমি বললাম- হে আল্লাহ্র রাসুল (সা.)! এলেম কী করে বিলুপ্ত হবে? অথচ আমরা নিজেরা কুরআন শিক্ষা করছি এবং আমাদের সন্তানদেরকে শিক্ষা দিচ্ছি। অতঃপর আমাদের সন্তানগণ তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষা দিতে থাকবে, এভাবে (বংশ পরম্পরায়) কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। তখন আল্লাহ্র রাসুল (সা.) বললেন- জিয়াদ! তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক! এতদিন তো আমি তোমাকে মদীনার একজন জ্ঞানী লোক বলেই মনে করতাম। (তুমি কি লক্ষ্য করোনি?) এই ইহুদি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায় কি তাওরাত ও ইনজিল কিতাব পড়ছে না? অথচ এ কিতাবে মর্ম অনুযায়ী তারা কর্ম করে না।” (মুসনাদে আহমদ, সুনানে ইবনে মাজাহ, তিরমিজি ও দারেমি শরীফের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৮) সুতরাং বিষয়টি স্পষ্ট যে, আল্লাহ্ তায়ালার মনোনীত মহামানবকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কিতাব অনুসরণ করলে আদর্শ চরিত্রবান হওয়া সম্ভব নয়।
তাই সাধারণ মানুষকে প্রকৃত মুু’মিন হওয়ার জন্য যিনি কুরআনের চরিত্রে চরিত্রবান, এরূপ মহামানবের সান্নিধ্যে যেতে হয়। সেই মহামানবের সহবতে গিয়ে তাঁর সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ আপন হৃদয়ের মাঝে ধারণ করতে হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- আইনের গ্রন্থাবলি অধ্যয়ন করে একজন ব্যক্তি বিচারক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। যেকোনো বিচারের রায় বিচারককেই প্রদান করতে হয়। বিচারকের আসনে আইনের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান গ্রন্থটিকে রেখে দিলে সেই গ্রন্থ রায় প্রদান করতে পারবে না। কিন্তু যিনি আইনের গ্রন্থ অধ্যয়ন করে আইন বিষয়ক যাবতীয় তথ্যাবলি নিজ হৃদয়ে ধারণ করতে পেরেছেন, তিনিই সঠিকভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন। অনুরূপভাবে, অলী-আল্লাহ্গণ হলেন কুরআনের চরিত্র তথা আল্লাহ্র চরিত্রে চরিত্রবান এবং আল্লাহ্র রঙে রঙিন। এইজন্য মু’মিনদেরকে অলী-আল্লাহ্গণের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের নির্দেশ প্রদান করে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন, “হে মু’মিনগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহ্র, আনুগত্য করো রাসুলের এবং তাঁদের যাঁরা তোমাদের মধ্যে (আল্লাহ্র সাথে যোগাযোগ করে) ফয়সালা দিতে পারেন।” (সূরা আন নিসা ৪: আয়াত ৫৯)
কিতাব অধ্যয়ন করে আমরা আল্লাহ্ সম্বন্ধে জানতে পারি। কিন্তু আল্লাহকে পেতে হলে যিনি আল্লাহ্কে পেয়েছেন, এমন একজন মহামানবের সান্নিধ্যে গিয়ে এলমে তাসাউফের শিক্ষা অর্জন করতে হয়। যুগে যুগে এটাই হচ্ছে আল্লাহ্কে পাওয়ার একমাত্র পদ্ধতি। যেমন- ড্রাইভিং শিখতে হলে কীভাবে ড্রাইভিং শিখা যায়, সেই সম্পর্কিত বই মুখস্ত করলে চালানোর যে বিষয়গুলো প্রয়োজন যেমন- এক্সেলেটর, ব্রেক, ক্লাচ ইত্যাদি সম্বন্ধে জানা যায়। কিন্তু গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। সেজন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ চালকের। তার নিকট গিয়ে অনুশীলন করে ড্রাইভিং শেখা সম্ভব।
পৃথিবীতে প্রতিটি শিক্ষা অর্জন করতে হলে একজন শিক্ষকের প্রয়োজন হয়। এজন্যই মহান আল্লাহ্ যুগে যুগে পথহারা মানুষকে তাঁর পথে আনার জন্য শিক্ষক তথা মোর্শেদ হিসেবে নবুয়তের যুগে নবি-রাসুল এবং বর্তমান বেলায়েতের যুগে অসংখ্য আউলিয়ায়ে কেরাম পাঠিয়েছেন এবং বর্তমানেও এই পাঠানোর ধারা অব্যাহত রয়েছে। যদি কিতাব পড়ে আল্লাহ্কে পাওয়া যেতো, তাহলে এত নবি-রাসুল আল্লাহ্ পৃথিবীতে প্রেরণ করতেন না এবং নবুয়ত পরবতীর্তে বেলায়েতের যুগের সূচনা করতেন না। নবি-রাসুলগণ সাধনা করে আল্লাহ্র সাথে যোগাযোগ করে নবুয়তি লাভ করে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে কিতাব অর্জন করেছিলেন। তাইতো কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, “মানুষ এনেছে গ্রন্থ; গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।” অর্থাৎ- মহামানবগণের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ নিজ হৃদয়ে ধারণ করার নামই ধর্ম। তাঁদের অনুসরণই সত্যিকার ধর্ম। এজন্য সর্বশেষ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ বলেন, “যারা অনুসরণ করে এমন রাসুলের, যিনি নিরক্ষর (কালির অক্ষরের জ্ঞান থেকে পবিত্র) নবি, যাঁকে তারা লিখিত পায় নিজেদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলের মধ্যে, যিনি তাদের নেক কাজের আদেশ দেন এবং নিষেধ করেন মন্দ কাজে, যিনি হালাল করেন তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু এবং হারাম করেন অপবিত্র বস্তু এবং অপসারিত করেন তাদের থেকে যে গুরুভার ও শৃঙ্খল, যা তাদের উপর ছিল। সুতরাং যারা তাঁর প্রতি ইমান এনেছে, তাঁকে সম্মান করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং অনুসরণ করেছে সে নুরের (আলোর), যা তাঁর সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে। এরূপ লোকেরাই প্রকৃত সফলকাম।” (সূরা আল আ‘রাফ ৭: আয়াত ১৫৭)
মহামানবগণ তথা নবি-রাসুল ও আওলিয়ায়ে কেরাম হলেন সবাক কুরআন। তাঁদের সান্নিধ্যে গিয়ে পথহারা গোমরাহি মানুষ আল্লাহ্র চরিত্রে চরিত্রবান এবং কুরআনের আদর্শে আদর্শবান হতে পারে। মহামানবগণ যে সবাক কুরআন সে প্রসঙ্গে শেরে খোদা হযরত আলী কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু বলেন, “আনা কিতাবুল্লাহি আন্নাতিকু”- আমি সরব আল্লাহ্র কিতাব। অর্থাৎ- আমি আল্লাহ্র কিতাবের প্রকৃত রহস্য বর্ণনাকারী। (তাফসীরে জিলানী ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৩) কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, সমাজের এক শ্রেণির মানুষ অলী-আল্লাহ্গণের কথার সঠিক মমার্থ না বুঝে নিজেদের জ্ঞানের স্বল্পতাকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের মন ও মর্জি মতো অপব্যাখ্যা এবং অপপ্রচার করে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, সমুদ্রে দুই শ্রেণির বাহন চলে- একটি হচ্ছে নৌকা বা জাহাজ, অন্যটি সাব মেরিন। যারা সমুদ্রের উপরিভাগে পরিভ্রমণ করে, সেই জাহাজের নাবিকের দৃষ্টিতে সমুদ্র হচ্ছে বিশাল অথৈ পানির ঢেউ। সেখানে অনেক মাছ পাওয়া যায়, অনেক বড় বড় ঢেউ আছে। সেই ঢেউয়ে অনেক নৌকা বা জাহাজ ডুবে যায়। দ্বিতীয়টি হচ্ছে সাবমেরিন। সাবমেরিনের নাবিকের দৃষ্টি হচ্ছে সমুদ্রের নিচে রয়েছে আরেক বিশাল জগত। যেখানে হিমালয়ের চেয়ে বড় পর্বত বিরাজমান। সমুদ্রের নিচে অনেক প্রাণী, খনিজ সম্পদ রয়েছে। কিন্তু সেখানে ঢেউ নেই। সেখানে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ সাবমেরিন পানির গভীরে ডুবেই চলে। প্রশ্ন হচ্ছে- সমুদ্রের উপরিভাগের জাহাজের নাবিক যদি বলেন সাবমেরিনের নাবিকের চিন্তা ধারা ও মতামত ভুল, তাহলে জাহাজের নাবিক বোকার স্বর্গে বাস করে। এই উক্তির মাধ্যমে জাহাজের নাবিকের জ্ঞানের স্বল্পতা প্রমাণিত হয়। আবার শিয়ালের কাছে আঙ্গুর ফল টক। কারণ শিয়াল আঙ্গুর ফল ধরতে পারে না। আর খাওয়াতো অনেক দূরের কথা। কিন্তু আঙ্গুর ফল কি আসলে টক? যদি আঙ্গুরের বীজ ভালো হয় এবং সঠিকভাবে পরিপক্ক হয় তাহলে তা টক হওয়ার কথা নয়। সুতরাং শিয়াল যদি বলে আঙ্গুর ফল টক এবং আমরা যদি তা মেনে নেই, তাহলে আমাদের চেয়ে বড়ো বোকা পৃথিবীতে আর কেউ থাকবে না। প্রকৃতপক্ষে, পাঁচ কেজি ওজনের একটি বাটখারা মাপতে পাঁচ কেজি ওজনের সমতুল্য কিছু অথবা পাঁচ কেজি ওজনের আরও একটি বাটখারার প্রয়োজন হবে। এখন দু’শ গ্রাম ওজনের বাটখারা দিয়ে যদি পাঁচ কেজি ওজনের বাটখারাকে পরিমাপ করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে দিন পার হয়ে যাবে, জীবন পার হয়ে যাবে, কিন্তু ওজন পরিমাপ করা সম্ভব হবে না। কারণ ঝিনুক দিয়ে যেমন সাগরের পানি সেচা যায় না, তেমনি নিজের জ্ঞানের স্বল্পতা দিয়ে আল্লাহ্র বন্ধুদের মযার্দা পরিমাপ করা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ্র নিকট আউলিয়ায়ে কেরামের মযার্দা অপরিসীম। এই প্রসঙ্গে হযরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, “মহান ও মহিমান্বিত আল্লাহ্ একশত রহমত সৃষ্টি করেন। এর মধ্যে থেকে একটি রহমত তিনি পৃথিবীবাসীর মাঝে বন্টন করে দেন। আর তিনি তাদের মাঝে এটি ছড়িয়ে দেন নিধার্রিত এক সময়ের জন্য। অবশিষ্ট নিরানব্বইটি রহমত মহান আল্লাহ্ আওলিয়ায়ে কেরামের মাঝে সঞ্চিত রেখেছেন। অতঃপর মহান ও মহিমান্বিত আল্লাহ্ পৃথিবীবাসীর মাঝে যে একটি রহমত বন্টন করেছেন, কিয়ামত দিবসে তা গুটিয়ে নেবেন এবং নিরানব্বইটি রহমতের সাথে তা সংযুক্ত করে সর্বমোট একশত রহমতই আওলিয়ায়ে কেরামের জন্য নিধার্রণ করে দেবেন।” (মুসনাদে আহমদ ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৩৩)
আমার মহান মোর্শেদ মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী যুগশ্রেষ্ঠ মহামানব সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান, যিনি ইসলাম ধর্মে প্রবিষ্ট শতাধিক সংস্কার করেছেন। এই মহামানব ৩৩ বছর নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ নামক ৮ খণ্ড তাফসীর শরীফ প্রণয়ন করেছেন। এই ৮ খণ্ড তাফসীর শরীফে তিনি পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে প্রমাণ করেছেন ‘আল্লাহ্ নিরাকার নন, তাঁর নুরের রূপ আছে।’ এর পুরস্কার হিসেবে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন পূর্ণিমার চাঁদে তাঁর চেহারা মোবারকের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি দেখিয়ে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন- তিনি বেলায়েতের যুগের শ্রেষ্ঠ ইমাম। তাঁর সান্নিধ্যে এসে মানুষ আল্লাহ্র পরিচয় লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন। এই মহামানব একদিকে যেমন মহান আল্লাহ্র প্রকৃত স্বরূপ উপস্থাপন করেছেন, তেমনি পবিত্র কুরআন, হাদিস ও ইতিহাসের আলোকে অকাট্য যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন হযরত রাসুল (সা.) শুধু ধনীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন দোজাহানের বাদশাহ।
আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে তাঁর প্রেরিত মহামানবের আদর্শ গ্রহণের মাধ্যমে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা বুঝার সুযোগ করে দিন। আমিন।