Cancel Preloader

ছবি- প্রতীকী

অলী-আল্লাহ্গণের মজলিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করায় মহাপাপীর ক্ষমা লাভ


হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে- “বনি ইসরাঈলের এক ব্যক্তি জঘন্য পাপ করত। মদ্যপান, ব্যভিচার ও মানুষ হত্যা ছিল তার নিত্য কর্ম। একে একে সে ৯৯ জন নিরপরাধ মানুষকে নির্মমভাবে খুন করে। একদা এ মহাপাপীর মাঝে অনুশোচনা সৃষ্টি হয়। অনুতাপের আগুনে তার হৃদয় দগ্ধ হতে থাকে। সে আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের আশায় অস্থির হয়ে ওঠে। সে অনেক খোঁজাখুজি করে একজন ধর্মযাজকের দ্বারস্থ হয়ে আরজ করে, হযরত! আমি ৯৯ জন মানুষ খুন করেছি, আমার জন্য কি আল্লাহ্র ক্ষমা আছে? ধর্মযাজক এ মহাপাপীর পাপের বিবরণ শুনে বললেন- আল্লাহ্ যদি তোমাকেই ক্ষমা করে দেন, তবে তিনি জাহান্নাম বানিয়েছেন কার জন্য? এ কথা শুনে বনি ইসরাঈলের ঐ ব্যক্তি ধর্মযাজককে হত্যা করে একশত’ খুন পূর্ণ করে। এ পর্যায়ে সে আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের আশায় পুনরায় পথ চলতে লাগলো। পথিমধ্যে লোকটি একজন আল্লাহ্ওয়ালা সুফির সাক্ষাৎ পায়। ঘটনা সবিস্তারে অবগত হয়ে সুফি বললেন- হ্যাঁ, তোমার জন্য আল্লাহ্র ক্ষমা আছে। আমি আল্লাহর এক ক্ষুদ্র বান্দা, তুমি অমুক স্থানে যাও। সেখানে কিছু সংখ্যক আল্লাহ্ওয়ালা ব্যক্তি আল্লাহ্র স্মরণে নিমগ্ন আছেন। লোকটি আল্লাহর ক্ষমা লাভের আশায় আল্লাহর অলী-বন্ধুদের মজলিসের দিকে পাগলের ন্যায় ছুটে চলল। কিন্তু কিছুপথ অগ্রসর হওয়ার পরই মালাকুল মউত তার সামনে এসে হাজির হলো। তার হায়াত ফুরিয়ে গেছে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার কিছুমাত্র সময় নেই। রুহ কবজ হয়ে গেলো। এদিকে পাপিষ্ঠ এ ব্যক্তির রুহ নেওয়ার জন্য সিজ্জিনের একদল ফেরেশতা যেমন আগমন করে, তেমনি ইল্লিনের একদল ফেরেশতাও হাজির হয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। সিজ্জিনের ফেরেশতাদের দাবি, মৃত ব্যক্তি মহাপাপী; সুতরাং তার রুহ জাহান্নামের অশান্তিতে নিক্ষিপ্ত হবে। ইল্লিনের ফেরেশতাদের দাবি, সে আল্লাহর ক্ষমা লাভের আশায় আল্লাহর বন্ধুদের দরবার শরিফের দিকে যাচ্ছিল; সুতরাং তাকে শান্তিময় স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহর দু’দল ফেরেশতার মাঝে একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন এ ফয়সালা দিয়ে, তোমরা উভয়দল স্থান মেপে দেখো। সে কি যাত্রাপথ থেকে অলী-আল্লাহ্গণের মজলিসের দিকে বেশি অগ্রসর হয়েছে, নাকি অর্ধেকেরও কম পথে আছে? উভয় স্থানের মধ্যে যে স্থানের দিকে সে অধিক নিকটবর্তী হবে, তাকে সে স্থানের বলে গণ্য করা হবে। এদিকে সর্বজ্ঞ আল্লাহ্ ফেরেশতা প্রেরণ করে লক্ষ্য করলেন- তাঁর আল-গাফুর তথা পরম ক্ষমাশীল নামের মহিমা প্রত্যাশী লোকটি দূরত্বের অর্ধেকের চেয়ে বেশি আসতে পারেনি, বরং অর্ধেকের চেয়েও এক বিঘত পরিমাণ জায়গা পেছনে রয়েছে। এ সময় সুমহান আল্লাহ্ তাঁর আল-গাফুর তথা পরম ক্ষমাশীল নামের মহিমা প্রকাশ করলেন, জমিনকে নির্দেশ করলেন- মৃত ব্যক্তির লাশকে এক হাত সামনে ঠেলে দাও। এদিকে প্রেরিত ফেরেশতার ফয়সালা অনুযায়ী দূরত্ব মেপে ইল্লিনের ফেরেশতারা লাশটিকে অলী-আল্লাহ্গণের মজলিসের অধিক নিকটবর্তী পেলো। অতঃপর তারাই আল্লাহর ক্ষমা লাভে ধন্য ঐ ব্যক্তির রুহটি শান্তিময় স্থানে নিয়ে যায়।” (তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী- ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা-৯১ ও ৯২; বোখারি শরিফ-১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৯৩ ও ৪৯৪; ই.ফা.বা. কর্তৃক অনুদিত বোখারি শরিফ- ৬ষ্ঠ খণ্ড, হাদীস নং-৩২২৪, পৃষ্ঠা- ১৫০ ও ১৫১; মুসলিম শরিফ- ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৫৯; মেশকাত শরিফ, পৃষ্ঠা-২০৩; এবং রিয়াদুস সালেহিন, পৃষ্ঠা-৩৫ ও ৩৬, হাদিস নং-২০)

সম্পর্কিত পোস্ট

14 Comments

  • আমীন

  • Amin

  • আমিন

  • আমিন

  • অনেক সুন্দর শিক্ষনীয় ঘটনা ! দলিলসহ উপস্থাপন করায় ধন্যবাদ ,

  • খুবই সুন্দর শিক্ষণীয় একটি ঘটনা। মহান আল্লাহ্‌ তা’য়ালা তাঁর অলীবন্ধুর উছিলায় আমাদের জীবনের গুনাহখাতা মাফ করুন…আমিন।

  • আমিন

  • আমিন

  • আলহামদুলিল্লাহ্। অনেক সুন্দর শিক্ষা নিয় পোষ্ট

  • Amin

  • অনলাইন পত্রিকাটি পেয়ে খুব ভালো লাগলো ।

  • আমিন

  • আমিন

  • Ameen

Leave a Reply to Shamim Rana Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *