তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী: একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা
ইমাম ড. আরসাম কুদরত এ খোদা
মহাবিশ্বের মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন। যখন কিছুই ছিল না, তখন তিনি ছিলেন, আবার যখন কিছুই থাকবে না, তখনও তিনিই থাকবেন। তিনিই সকলকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে এনেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমান মুসলিম সমাজে বহুল প্রচলিত একটি ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে- বিশ্ব জগতের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন নিরাকার! তাঁকে জীবদ্দশায় দেখা সম্ভব নয়। কেউ যদি তাঁর আকার নিয়ে চিন্তা করে তাঁর দিদার লাভ করে, সে ইমানহারা হয়ে যাবে। আর এই অমূলক ও ভ্রান্ত ধারণা বিশ্বাস করে মানুষ সরল মনে নিরাকার ও অদৃশ্য আল্লাহর ইবাদত করছে। অথচ নবুয়তের যুগে নবি-রাসুল মানুষকে মহান আল্লাহর সাথে যোগাযোগের পদ্ধতি শিক্ষা দিতে এই ধূলির ধরায় আগমন করেছেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় বেলায়েতের যুগে অলী-আল্লাহ্গণ আল্লাহ্কে পাওয়ার শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। যদি আল্লাহ্ নিরাকার হতেন তাহলে তাঁরা মানুষকে কার সাথে যোগাযোগের শিক্ষা দিয়েছেন? আর মানুষইবা কাকে পাওয়ার জন্য ইবাদত করে?
জীবদ্দশায় স্রষ্টার দিদার লাভ অসম্ভব হলে ইমানী পরীক্ষায় কেন প্রশ্ন করা হয়- ‘তোমার প্রভু কে?’ প্রভু অদৃশ্য হলে হযরত রাসুল (সা.) মিরাজে গিয়ে কিভাবে প্রভুর দর্শন লাভ করলেন? এই বিষয়গুলো কি প্রমাণ করে আল্লাহ্ নিরাকার?
মহান আল্লাহ্ মানুষের ক্বালবের ৭ম স্তর নাফসির মোকামে অবস্থান করার পরও মানুষের বিশ্বাস তিনি সাত আসমানের উপরে আছেন। মূলত প্রভুর সাথে যোগাযোগের পন্থা হারিয়ে ফেলার কারণে এক সময়ের শ্রেষ্ঠ জাতি মুসলমান আজ নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অবহেলিত। এমনি এক সংকটময় মুহূর্তে মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর পরিচয় তুলে ধরার জন্য মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানকে ধূলির ধরায় প্রেরণ করেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানই সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালে জগদ্বাসীর উদ্দেশে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন- “আমি আল্লাহ্কে দেখেছি।” তাঁর এই ঘোষণা শুনে স্বার্থান্বেষী মহলে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। তাসাউফ বিবর্জিত আলেম সমাজের চরম বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েও তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বললেন, “আমি আল্লাহ্কে এমনভাবে চিনি, যেভাবে সন্তান তার পিতাকে চেনে।”
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস দূর করার লক্ষ্যে পবিত্র কুরআন ও মারফু হাদিসের আলোকে প্রমাণ করার সিদ্ধান্ত নেন- ‘মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন, তাঁর নুরের রূপ আছে’। এ মহাসত্য বাস্তবায়নে তিনি কুরআন গবেষণা শুরু করেন।
প্রথমে এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল কুরআনের আলোকে জীবন বিধান কিতাব রচনা করা। যে কিতাবটিতে পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহ বিষয় ভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায় সনিড়ববেশিত করা হবে, যেন মানুষের পক্ষে তা সহজে বোধগম্য হয়। পরবর্তীতে গবেষণা কার্যক্রম শুরু হলে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান সিদ্ধান্ত নিলেন ‘যার বাণী কুরআন, সর্বপ্রথম তাঁর পরিচয় খুঁজে বের করতে হবে। কেননা মানুষ যদি আল্লাহর পরিচয় না জানে, তবে আল্লাহর বাণীর গুরুত্ব কখনোই অনুধাবন করতে পারবে না।’
আল্লাহর পরিচয় ও স্বরূপ তুলে ধরার লক্ষ্যে ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ গ্রন্থের উৎপত্তি। মানবজাতির ইতিহাসে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানই একমাত্র তাফসীর প্রণেতা যিনি নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন ও মারফু হাদিসের আলোকে মহান আল্লাহর জাত-পাক ও ৯৯টি সিফাত বা গুণবাচক নামের পরিচয় উপস্থাপন করে প্রায় ১১ হাজার পৃষ্ঠা সংবলিত ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ নামক ৮ খণ্ড তাফসীর প্রণয়ন করেন। এই ৮ খণ্ড তাফসীরের মাধ্যমে প্রমাণ করেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন।’ নিম্নে এই ৮ খণ্ড তাফসীরের সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা উপস্থাপন করা হলো-
১ম খণ্ড: সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ১ম খণ্ডে ১১টি অধ্যায়ে মহান আল্লাহর জাত-পাকের পরিচয় উপস্থাপন করেছেন। এই খণ্ডে মহান আল্লাহর একত্ববাদের বিষয়ে পবিত্র কুরআনের ২৮ খানা আয়াত এবং আল্লাহর নুরময় সত্তার বর্ণনায় ১৮ খানা আয়াত লিপিবদ্ধ করা হয়। এছাড়া মহান আল্লাহর চেহারা মোবারকের বর্ণনায় পবিত্র কুরআনের ১৪ খানা আয়াত, চক্ষু মোবারকের বর্ণনায় ৬৩ খানা আয়াত, শ্রবণেন্দ্রিয়ের বর্ণনায় ৪৮ খানা আয়াত, জবান মোবারকের বর্ণনায় ৪৭৭ খানা আয়াত, হাত মোবারকের বর্ণনায় ১৭ খানা আয়াত, কদম মোবারকের বর্ণনায় ২ খানা আয়াত এবং নফস বা দেহ মোবারকের বর্ণনায় ৬ খানা আয়াত উপস্থাপিত হয়। এভাবে মহান আল্লাহর নুরের রূপ যথা- নুরের চেহারা মোবারক, নুরের চক্ষু মোবারক, নুরের কান মোবারক, নুরের হাত মোবারক, নুরের কদম মোবারক ও নুরের দেহ মোবারকের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করার পর তাফসীর প্রণেতা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান মহান আল্লাহর রূহ মোবারকের বর্ণনায় পবিত্র কুরআন থেকে ২০ খানা আয়াত সনিড়ববেশিত করেন। এভাবে তিনি মহান আল্লাহর পরিপূর্ণ রূপের বর্ণনা পবিত্র কুরআনের প্রামাণ্য দলিল দ্বারা প্রমাণ করেন। অতঃপর তিনি মহান আল্লাহর দর্শন লাভ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনের ৩০ খানা আয়াত তুলে ধরে মহান আল্লাহর জাত-পাকের পরিচয় লিপিবদ্ধ করে প্রমাণ করেন- ‘মহান আল্লাহ্ রূপহীন নিরাকার নন, তাঁর নুরের রূপ আছে।’ মূলত ১ম খণ্ডে তাফসীর প্রণেতা পবিত্র কুরআন থেকে ৭২৩ খানা আয়াত এবং ২৮০৮ খানা হাদিসের আলোকে মহান আল্লাহর জাত-পাকের পরিচয় মানবজাতির নিকট তুলে ধরেন। উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ১ম খণ্ড ১৫৬৭ পৃষ্ঠা সংবলিত।
২য় খণ্ড: তাফসীর প্রণেতা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ২য় খণ্ডে ৬টি অধ্যায়ে মহান আল্লাহর ৯৯টি সিফাতের মধ্য থেকে ৩৪টি সিফাত তথা গুণবাচক নামের বর্ণনা উপস্থাপন করেন। তিনি ৩৪টি সিফাতের বর্ণনায় পবিত্র কুরআন থেকে ৫০১ খানা আয়াত এবং ১৪৩৮ খানা হাদিস উল্লেখ করে প্রমাণ করেছেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন’। উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ২য় খণ্ডটি ১৩৪৭ পৃষ্ঠা সংবলিত।
৩য় খণ্ড: ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৩য় খণ্ডে ৪টি অধ্যায়ে মহান আল্লাহর ৫টি গুণবাচক নামের পরিচয় উপস্থাপনের জন্য পবিত্র কুরআন থেকে ৪৫৩ খানা আয়াত ও ১৩০৬ খানা হাদিস সনিড়ববেশিত করা হয়। এ তাফসীর শরীফে ৪টি অধ্যায়ে প্রমাণ করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ্ কুল-কায়েনাতের সকল প্রাণীর রিজিকদাতা, তিনি সবাইকে দেখেন, সবার মুখ ও অন্তরের কথা শুনেন এবং সকলের সার্বিক অবস্থার কথা জানেন। এই থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে- ‘মহান আল্লাহর নূরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন।’ উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৩য় খণ্ডটি ১৪৩১ পৃষ্ঠা সংবলিত।
৪র্থ খণ্ড: তাফসীর প্রণেতা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৪র্থ খণ্ডে ১৫টি অধ্যায়ে মহান রাব্বুল আলামিনের ১৮টি সিফাতের পরিচয় লিপিবদ্ধ করেছেন। এই ১৮টি গুণবাচক নাম মোবারকের মহিমা, বাস্তবতা ও প্রয়োগ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি পবিত্র কুরআন থেকে ৪২১ খানা আয়াত ও ১৯৬৬ খানা হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে মহান আল্লাহর স্বরূপ তুলে ধরে প্রমাণ করেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন’। এছাড়া তিনি পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতের তাফসীর অন্য আয়াত দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন। যাকে তাফসীর শাস্ত্রের পরিভাষায় ‘তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন’ বলা হয়। উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৪র্থ খণ্ডটি ১৩৮৬ পৃষ্ঠা সংবলিত।
৫ম খণ্ড: সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৫ম খণ্ডে মহান আল্লাহর ১৭টি সিফাতের পরিচয় ১৭টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করেছেন। তিনি এই ১৭টি অধ্যায়কে ৫৩টি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করে পবিত্র কুরআন থেকে ৪৫৮ খানা আয়াত ও ১৯৩৩ খানা হাদিসের সমন্বয়ে প্রমাণ করেছেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন।’ উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৫ম খণ্ডটি ১৪৬১ পৃষ্ঠা সংবলিত।
৬ষ্ঠ খণ্ড: সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৬ষ্ঠ খণ্ডে মহান রাব্বুল আলামিনের সুন্দরতম গুণবাচক নামসমূহের ২৩টি গুণবাচক নামের পরিচয় ২৩টি অধ্যায়ে উপস্থাপন করেছেন। পবিত্র কুরআন থেকে ৪৫৯ খানা আয়াত ও ১৮৯৪ খানা হাদিসের আলোকে মহান আল্লাহর ২৩টি গুণবাচক নামের দ্বারাই তাফসীর প্রণেতা প্রমাণ করেছেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন।’ এছাড়া সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান বিভিন্ন অধ্যায়ে আল্লাহর সিফাত বা গুণবাচক নামের পর্যালোচনা অংশে পবিত্র কুরআনের ১২০৫ খানা আয়াত সনিড়ববেশিত করেছেন। যা পাঠ করে পাঠকবৃন্দ মহান রাব্বুল আলামিনের গুণাবলি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত হবেন। উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৬ষ্ঠ খণ্ডটি ১৩৭৩ পৃষ্ঠা সংবলিত।
৭ম খণ্ড: ‘তাফসীরে সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৭ম খণ্ড অধ্যয়নে পাঠকবৃন্দ মহান আল্লাহর ৯টি গুণবাচক নামের মহিমা ও বৈশিষ্ট্যের পরিচয় সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন। এই খণ্ডে তাফসীর প্রণেতা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান পবিত্র কুরআনের সিফাত ভিত্তিক ৫৪৪ খানা আয়াত ও ২২১৯ খানা হাদিস উপস্থাপনের মাধ্যমে অকাট্যভাবে প্রমাণ করেছেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন’। এছাড়া এই খণ্ডে বিষয় সংশ্লিষ্ট আরও অনেক আয়াত ও হাদিস সন্নিবেশিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৭ম খণ্ডটি ১৪০৬ পৃষ্ঠা সংবলিত।
৮ম খণ্ড: ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৮ম খণ্ডে তাফসীর প্রণেতা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান মহান রাব্বুল আলামিনের ‘আর-রব’ নাম মোবারকের মহিমা উপস্থাপন করেছেন। তিনি পবিত্র কুরআন থেকে ৬২১ খানা আয়াত ও ২৩৪৩ খানা হাদিসকে ৩২টি পরিচ্ছেদে বিন্যস্ত করে প্রমাণ করেছেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন।’ উল্লেখ্য যে, ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ ৮ম খণ্ডটি ১৪০৩ পৃষ্ঠা সংবলিত।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ নামক ৮ খণ্ড তাফসীর প্রণয়নের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন- ‘মহান আল্লাহর নুরের রূপ আছে, তিনি নিরাকার নন’। এ তাফসীর শরীফ পাঠ করে প্রাজ্ঞ পাঠক সমাজের জানার সুযোগ হবে যে- ‘মহান আল্লাহ্ স্থুল দেহধারী নন, একইভাবে তিনি মানুষের মতো রক্ত মাংসের দেহধারী নন, তিনি নুরের’। এ নুরময় সত্তাকে দেখা যায়, তাঁর কথা শোনা যায়, তবে হাত দিয়ে ধরা ও ছোঁয়া যায় না। উপমা স্বরূপ বলা যায়, টেলিভিশনের পর্দায় যে মানুষটি সংবাদ পাঠ করে, এটি ঐ ব্যক্তির আলোকদেহ। ফলে টেলিভিশনের পর্দায় মানুষের আলোক দেহকে দেখা যায়, তার কথা শোনা যায়, কিন্তু তাকে ধরা যায় না, এমনকি স্পর্শ করা বা ছোঁয়া যায় না। অনুরূপভাবে পরিশুদ্ধ ক্বালবের পর্দায় মহান আল্লাহর নুরের চেহারা মোবারক দেখা যায় এবং তাঁর কথা শোনা যায়। মানুষ যদি সাধনার মাধ্যমে আত্মিক পঞ্চ-ইন্দ্রিয়কে জাগ্রত করতে পারে, তাহলে সেই মানুষটি আত্মিক জবানে আল্লাহর সাথে কথাও বলতে পারেন।
মূলত সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানই বিশ্বের ইতিহাসে একমাত্র তাফসীরকারক, যিনি ‘মহান আল্লাহ্ নিরাকার নন, তাঁর নুরের রূপ আছে’- এই বিষয়ে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে ৮ খণ্ড তাফসীর রচনা করে বিশ্ববাসীর নিকট মহান আল্লাহর প্রকৃত স্বরূপ উপস্থাপন করেছেন। আবহমানকাল থেকে মানব জাতি মহান আল্লাহ্কে নিরাকার ভেবে যে ভুল করে আসছিলেন, জগৎশ্রেষ্ঠ মহামানব সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান ৮ খণ্ড তাফসীর প্রণয়ন কর সে ভুল থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করেছেন। তাই তাফসীর প্রণেতা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের কদম মোবারকে জানাই লাখো শুকরিয়া।
[লেখক: পরিচালক, সমন্বয়ক ও সমস্যার ফয়সালাকারী, দেওয়ানবাগ শরীফ; সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি]