পবিত্র শবে মি‘রাজের গুরুত্ব
মুহাম্মদ জহিরুল আলম
মহান আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় বন্ধু হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে মহাসম্মানে বিভূষিত করার জন্য তাঁকে ‘মি‘রাজ’ দান করে একান্ত সান্নিধ্যে নিয়ে গেলেন। মি‘রাজের মাধ্যমেই দয়াল রাসুল (সা.)-এর আত্মিক উৎকর্ষতা পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়েছিল, যা ইতঃপূর্বে কোনো নবি-রাসুলের পক্ষে সম্ভব হয়নি। মি‘রাজের রজনিতে সমস্ত নবি-রাসুল রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-কে সাদর সম্ভাষণ জানানোর জন্য সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান ছিলেন। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে নবি ও রাসুলগণের নামাজে ইমাম হয়ে ‘ইমামুল মুরসালিন’ খেতাবে ভূষিত হন। মি‘রাজ রজনিতে মহিমান্বিত আল্লাহ্ তায়ালা নিজের মহিমা ও সৃষ্টিলীলার নিগূঢ় রহস্যের সাথে তাঁর হাবিবকে পরিচিত করিয়ে দিয়েছেন। বেহেশত, দোজখ, আরশ, কুরসি ইত্যাদি সমস্ত রহস্যের দ্বার সেদিন উন্মোচিত করে আপন বন্ধুকে দেখিয়েছিলেন।
‘মি‘রাজ’ আরবি শব্দ। যার অর্থ-পথ, সিড়ি, ঊর্ধ্বে আরোহণ, দিদার ইত্যাদি। হযরত রাসুল (সা.)-এর আল্লাহর সাথে সাক্ষাত লাভের উদ্দেশ্যে ঊর্ধ্বারোহণকে ‘মি‘রাজ’ বলা হয়। পবিত্র কুরআনে মি‘রাজ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ্ পবিত্র মহিমাময়, যিনি তাঁর বান্দা [মুহাম্মদ (সা.)]-কে রজনিতে পরিভ্রমণ (সায়ের) করিয়েছিলেন, মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার চতুস্পার্শ্বকে আমি বরকতময় করেছি- যাতে আমি তাঁকে দেখাই আমার নিদর্শন (চেহারা মোবারক)। নিশ্চই তিনি সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।” (সূরা বনী ইসরাইল ১৭: আয়াত ১)। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এখানে অল্লাহ্ বলেছেন- “আমি আমার হাবিব মুহাম্মদ (সা.)-কে ভ্রমণ বা সায়ের করিয়েছি আমার অলৌকিক নিদর্শনসমূহ দেখানোর জন্য। আর ঐ রাতে আমি তাঁকে যা যা দেখিয়েছি, তা সবই ছিল অলৌকিক নিদর্শনাবলি। আর এ ব্যাপারে কোরাইশদের মন্তব্য আল্লাহ্ শুনেছেন এবং তাদের অবস্থা ও রাসুল (সা.)-এর ভ্রমণ বা সায়েরের অবস্থাও আল্লাহ্ দেখেছেন।” (তাফসীরে ইবনে আব্বাস, পৃষ্ঠা ২৮২)।
রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-এর ৫২ বছর বয়সে ২৬ রজব দিবাগত রাত্রিতে মি‘রাজের অভূতপূর্ব অলৌকিক ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল। মি‘রাজের পূর্বে হযরত রাসুল (সা.)-এর চাচা হযরত আবু তালেব (রা.) ওফাত লাভ করেন এবং চাচার মৃত্যুর কয়েক মাস পর প্রাণপ্রিয় সহধর্মিণী হযরত খাদিজাতুল কোবরা (রা.) ইন্তেকাল করেন। প্রিয়জনদের বিয়োগ ব্যথায় কাতর এবং ধর্মপ্রচারের নানা প্রতিবন্ধকতায় জর্জরিত অবস্থায় হযরত রাসুল (সা.)-কে আত্মিক শান্তি দানের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পবিত্র মি‘রাজ সংঘটিত হয়।
মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, যুগের ইমাম আম্বিয়ায়ে কেরামের ধর্মের দায়িত্ব ও বেলায়েত লাভকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান ধর্মের প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে জগদ্বাসীকে শিক্ষা দিয়েছেন। পবিত্র মি‘রাজের বিশ্লেষণে তিনি ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ নামক তাফসিরে উল্লেখ করেছেন, মি‘রাজ ছিল বোরাক সদৃশ্য নিজের নফ্সের উপর সওয়ার করে ঊর্ধ্বলোকের সাত আসমানতুল্য আপন ক্বালবের ৭টি স্তর যথা- সুদুর, নশর, শামসি, নুরি, কুরব ও মকিমের স্তরগুলো বিদ্যুৎ বেগে সায়ের (ভ্রমণ) করে ক্বালবের ৭ম স্তর তথা নাফসির মোকামে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ।
তখন সৃষ্টিজগতে মহান আল্লাহর সাথে হযরত রাসুল (সা.)-ও সর্বত্র ছিলেন। দয়াল রাসুল (সা.)-এর ক্বালব তথা রূহে আজম আপন নফসকে বাহন হিসেবে আরোহণ করে বিদ্যুৎগতিতে ঊর্ধ্বালোকে সায়ের করে আরশুল আজিমে অবস্থানরত মহান আল্লাহ্র সান্নিধ্যে গমন করে একান্ত আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে হযরত রাসুল (সা.)-এর মি‘রাজ সংঘটিত হয়।
মি‘রাজের সময় হযরত জিব্রাইল (আ.) যেখানে হযরত রাসুল (সা.)-কে পৌছিয়ে দিয়ে উপরে গমন থেকে বিরত হয়েছিলেন, তাকে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ বলা হয়। আরবি ভাষায় ‘সিদরাতুন’ শব্দের অর্থ বরই বা কুল বৃক্ষ। ‘আল মুনতাহ’ শব্দের অর্থ শেষ প্রান্ত বা শেষ সীমা। সুতরাং ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ শব্দের অর্থ ‘সীমান্তবর্তী কুল বৃক্ষ’। সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণনা করেন, ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ বা সীমান্তবর্তী কুল বৃক্ষ বলা হয় এ জন্য যে, এ স্থান ফেরেশতাদের শেষ সীমারেখা। এটি অতিক্রম করা তাদের কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এরপর হতেই শুরু হয় আল্লাহময় জগত। তিনি বলেন, সিদরাতুল মুনতাহা বলতে মানুষের বক্ষস্থিত ক্বালবের সাতটি স্তরের প্রথম স্তর সুদুরের মোকামকে বুঝায়। এ স্থানকে কুল বৃক্ষের সাথে তুলনা করা হয়েছে এ জন্য যে, বরই গাছ যেমন কাঁটাযুক্ত অর্থাৎ কাঁটার আঘাত অতিক্রম করে এর ফল লাভ করতে হয়, তেমনি মানুষের ক্বালবের প্রথম স্তর সুদুরের মোকামে অবস্থানরত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত হতে না পারলে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করা যায় না। আর আল্লাহর নৈকট্য লাভ জাগতিক যে কোনো ফল লাভ অপেক্ষা অধিকতর কঠিন। সিদরাতুল মুনতাহার কুল বলতে মানুষের ক্বালব বা হৃদপিন্ডকে বুঝায়। ক্বালবের সাতটি স্তর রয়েছে, যথা: সুদুর, নশর, শামসি, নুরি, কুরব, মকিম ও নাফসির মোকাম। সাধনার মাধ্যমে সুদুরের মোকাম অতিক্রম করার পরই আল্লাহর রহস্যময় জগতের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে ক্বালবের এ সাতটি স্তর অতিক্রম করতে পারলেই মহান আল্লাহর দিদার লাভ করা সম্ভব। কেননা মহান আল্লাহ্ নাফসির মোকামে অবস্থান করেন। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- “আমি তোমাদের (ক্বালবের সপ্তম স্তর) নাফসির মোকামে বিরাজ করি, তোমরা কি দেখ না?” (সূরা আয্ যারিয়াত ৫১: আয়াত ২১)। হাদিস শরীফে আল্লাহর রাসুল (সা.) ফরমান, “মু‘মিন ব্যক্তির ক্বালব বা দিল আল্লাহর আরশ।” সাত আসমানতুল্য ক্বালবের এ সাতটি স্তর অতিক্রম করতে হয় কেবলমাত্র আল্লাহর প্রেম হাসিলের মধ্য দিয়ে।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ বলেন, “তাকে [হযরত রাসুল (সা.)] শিক্ষা দান করে শক্তিশালী (মহান আল্লাহ্), প্রজ্ঞাসম্পন্ন, সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল, তখন সে ঊর্ধ্বদিগন্তে, অতঃপর সে তার নিকটবর্তী হলো। অতি নিকটবর্তী, ফলে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান রইলো অথবা তারও কম। তখন আল্লাহ্ তাঁর বান্দার প্রতি যা ওহি করার তা ওহি করলেন।”(সূরা আন্ নাজম ৫৩: আয়াত ৫-১০)। এ বিষয়ে হযরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- ‘‘যখন আমাকে (মি‘রাজের রজনিতে) আকাশে পরিভ্রমণ করানো হচ্ছিল তখন মহিমান্বিত প্রতিপালক আল্লাহ্ আমার নিকটবর্তী হলেন, আর এ সময় তিনি আমার এতই নিকটবর্তী হলেন, যতখানি তির ধনুকের নিকটবর্তী হয়, অতঃপর তিনি আরো নিকটে এলেন।’’ (তাফসীরে দুররে মানছুর ১৫নং খণ্ড, পৃষ্ঠা ২২৭)
এ প্রসঙ্গে যুগের শ্রেষ্ঠ ইমাম সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান বলেন, নুরময় সত্তা আল্লাহ্ হযরত রাসুল (সা.)-এর ক্বালবের সপ্তম স্তর নাফসির মোকাম হতে প্রথম স্তর সুদুরের মোকামে এগিয়ে এসে প্রিয় বন্ধুকে স্বাগত জানান। অতঃপর রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর দিদার লাভ করলেন এবং মহান মালিকের সাথে ক্বালবের বাকী পাঁচটি স্তর অতিক্রম করে নাফসির মোকামে উপনীত হন। প্রথমেই মহান আল্লাহ্ বন্ধুত্বের দাবী নিয়ে হযরত রাসুল (সা.)-কে বললেন, হে মাহবুব (সা.)! বন্ধু যখন বন্ধুর বাড়ি আসে, তখন সাথে উপহার-উপঢৌকন নিয়ে আসে। হে বন্ধু! আপনি তো আমারই আমন্ত্রণে আমার কাছে এসেছেন, তাহলে আজ আপনি আমার জন্য কী নিয়ে এসেছেন? জবাবে হযরত রাসুল (সা.) বললেন-“হে দয়াময়! সকল পবিত্রতা, নামাজ ও ইবাদত আপনার।” মহান রাব্বুল আলামিন আপন মাহবুবের এ প্রশংসা বাণী উপহার পেয়ে খুশি হলেন। অতঃপর তিনি জবাব দিলেন-“হে বন্ধু! আপনার উপর পরম শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।”
পরম প্রেমাস্পদ মহান আল্লাহর এ সালাম পেয়ে হযরত রাসুল (সা.) পরিপূর্ণরূপে খুশি হতে পারলেন না এ জন্য যে, মহান আল্লাহ্ এ সালাম কেবলমাত্র তাকেই উদ্দেশ্য করে দিয়েছেন। অতঃপর হযরত রাসুল (সা.) আল্লাহর এ সালামের মধ্যে স্বীয় উম্মতের সৎকর্মশীল মু’মিনদের অন্তর্ভূক্ত করে বললেন- হে দয়াময়! আপনার এ সালাম আমাদের এবং আমার উম্মতের মধ্যে যারা নেককার, পরহেজগার, মুত্তাকি ও মু‘মিন বান্দাদের উপর বর্ষিত হোক।” মহান রাব্বুল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-এর এই উক্তিতে খুশি হলেন এবং প্রিয় বন্ধু যাদেরকে আল্লাহর এ সালামের অন্তর্ভুক্ত করেছেন তাদেরকে কবুল করে নিলেন। এতে হযরত রাসুল (সা.) খুশি হলেন। অতঃপর তিনি আল্লাহ্কে প্রাণ ভরে দেখে সামনাসামনি মহান মালিকের একত্ববাদের সাক্ষ্য দেন- “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁরই বান্দা ও রাসুল।” হযরত রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতের জন্য মি‘রাজ চিরস্থায়ী করার জন্যে নামাজকে তোহফা হিসেবে গ্রহণ করেন।
বর্তমান যুগে আশেকে রাসুলগণ সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর শিক্ষা গ্রহণ করে সাধনার মাধ্যমে নামাজে আল্লাহর দিদার লাভ করতে সক্ষম হচ্ছেন। মোহাম্মদী ইসলামের অন্যতম শিক্ষা নামাজে হুজুরি অর্থাৎ মহান আল্লাহ্কে হাজির, নাজির, ওয়াহেদ জেনে একাগ্রতার সাথে তাঁর সামনে উপস্থিত হয়ে আল্লাহর নুরের কদম মোবারকে সিজদা করা। জগৎশ্রেষ্ঠ এ মহামানবের শিক্ষা গ্রহণ করলে দুনিয়ার চিন্তামুক্ত হয়ে খেয়াল ক্বালবে ডুবিয়ে আল্লাহর প্রেমে মশগুল হয়ে নামাজ আদায় করা যায় এবং নামাজে মি‘রাজ তথা আল্লাহর দিদার নসিব হয়। সূফী সম্রাটের শিক্ষায় পবিত্র মি‘রাজের পূর্ণ প্রতিফলন ফুঁটে উঠে। তাঁর বর্ণিল জীবনে সাধনার মূল লক্ষ্যই ছিল মহান আল্লাহর প্রকৃত স্বরূপ জগদ্বাসীর নিকট তুলে ধরা, মানুষ যাতে তার পরম স্রষ্টার পরিচয় লাভ করতে পারে। তিনি তাঁর পবিত্র বাণী মোবারকে বলেন, “আজ আমি এই ভেবে স্বস্তি পাই যে, আমার শিক্ষা গ্রহণ করে অগণিত মানুষের আল্লাহ্ ও হযরত রাসূল (সা.)-এর নৈকট্য ও দিদার নছিব হয়েছে। আমি চির শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম পুনরুজ্জীবিত করার পুরস্কারস্বরূপ অগণিত মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পেয়েছি, লাভ করেছি বহু দুর্লভ খেতাব ও মর্যাদা। তাই সকলের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান, আসুন আমরা সবাই মহান আল্লাহ্ ও হযরত রাসূল (সা.)-এর চির শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামের আলোর পথে পরিচালিত হয়ে আমাদের জীবনকে শান্তিময় ও সাফল্যমণ্ডিত করি।” তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, সভ্যতার এ ক্রান্তিলগ্নে সূফী সম্রাটের শিক্ষাই আমাদের মুক্তির পথ দেখাতে সক্ষম।
তথ্যসূত্র:
১। তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী ১ম খণ্ড; সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান
২। সূফী সম্রাটের যুগান্তকারী অবদান: আল্লাহ্ কোন পথে?; সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান
৩। আত্মার বাণী মার্চ সংখ্যা ২০২০ খ্রি. ঢাকা থেকে প্রকাশিত
৪। সূফী সম্রাট স্মরণিকা ২০১৮ তাসাউফ পাবলিকেশন্স, ঢাকা-১০০০
[লেখক: পিএইচ.ডি গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]