Cancel Preloader

হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা


ড. মোবারক হোসেন
বিশ্বজাহানের মালিক মহান রাব্বুল আলামিন। মহান স্রষ্টার অপরূপ সৌন্দর্য বিভূষিত করে অগণিত সৃষ্টিরাজির চারণভূমি বিশ্বজগত সৃজন করেছেন। পৃথিবীতে মানবজাতিসহ অসংখ্য মাখলুকাত সৃষ্টি করে মানবজাতিকে সবার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। যে মহামানবকে উসিলা করে সৃষ্টিজগত সৃজন করেছেন তিনি সকল নবি-রাসুল তথা সকল সৃষ্টির মূল, সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সাইয়্যেদুল মুরসালিন হযরত মোহাম্মদ (সা.)। সৃষ্টিজগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মানবতার মুক্তির দিশারি হযরত রাসুল (সা.)। আল্লাহ্র মহান বন্ধু সৃষ্টিজগতের মূল হযরত মোহাম্মদ (সা.) শুভাগমন করেন ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে আগস্ট মোতাবেক ১২ই রবিউল আউয়াল, সোমবার প্রত্যুষে আরবের মক্কানগরীতে সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে। তাঁর সম্মানিত পিতার নাম হযরত আবদুল্লাহ (আ.) এবং সম্মানিত মাতার নাম হযরত আমেনা (আ.)।
মানবতা, শান্তি, মুক্তি ও শৃঙ্খলাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার মহান শিক্ষক ছিলেন আমাদের প্রিয় নবি হযরত মোহাম্মদ (সা.)। জাহেলিয়াতের নিকাশ আঁধার চিরে ঝলমলে আলোর উদয় হয়েছে সত্যের সূর্য মোহাম্মদ (সা.)। আরবের তৎকালীন অভিজাত পরিবারের প্রথা অনুযায়ী শিশু মোহাম্মদ (সা.)-এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অর্পিত হয় বনি সা’দ গোত্রের নারী হযরত হালিমা (রা.)-এর উপর। ইনসাফ ও সাম্যের মহান আদর্শ নিয়ে শুভাগমন করেন আমাদের দয়াল রাসুল (সা.)। হযরত রাসুল (সা.)-কে ইমামুল মুরসালিন বা পয়গম্বরগণের ইমাম বলা হয়। পৃথিবীতে তাঁর আগমনের সুসংবাদ পূর্ববর্তী নবি-রাসুলগণের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। হযরত রাসুল (সা.)-কে তাঁর আপনরূপে পাওয়ার জন্য যুগযুগান্তরের প্রতীক্ষা, পুঞ্জীভূত বেদনা ও ক্লান্তিতে সমগ্র পৃথিবী উতলা হয়ে উঠে।
পৃথিবী জুড়ে মানুষের নৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় যাবতীয় বিষয়ে নেমে আসে চরম অধঃপতন। পৃথিবীর ঘনঘোর আচ্ছন্ন দিনে মানবজাতিকে সত্য ও শান্তির পথে তুলে আনার জন্যে মহান আল্লাহ্ তাঁর সর্বোত্তম বন্ধু হযরত রাসুল (সা.)-কে প্রেরণ করেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেছেন- হযরত মোহাম্মদ (সা.) যে যুগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তাঁকে শুধু সেই যুগেরই একজন মনীষী বলা হবে না, বরং তিনি ছিলেন সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মনীষী।
শুধুমাত্র ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর নন, পৃথিবীতে যত নবি-রাসুল এবং মনীষীর আবির্ভাব ঘটেছে, প্রায় প্রত্যেকেই হযরত রাসুল (সা.)-এর সুউচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে তাঁদের অনুসারীদেরকে বলেছেন। বিশ্বজাহানের মালিক মহান রাব্বুল আলামিন এই পৃথিবীতে মানবজাতিসহ অসংখ্য মাখলুকাত সৃষ্টি করে, মানবজাতিকে সবার উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। সৃষ্টিজগতে আল্লাহ্র দেওয়া সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হলেন আমাদের দয়াল রাসুল (সা.)। মহান প্রভু তাঁর প্রিয় বন্ধুর মর্যাদা সম্পর্কে বলেন- “হে রাসুল (সা.)! আমি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম সৃষ্টিজগতের কোনো কিছুই সৃষ্টি করতাম না।” (তাফসীরে মাজহারী. ১০ম খণ্ড. পৃষ্ঠা ২৮০) হযরত রাসুল (সা.)-এর শাফায়াত ছাড়া কারো মুক্তি হবে না। যাঁকে ভালো না বাসলে কেউ ইমানদার হবে না, তিনি রাহমাতুল্লিল আলামিন হয়ে সমস্ত সৃষ্টিরাজির চেতনা শক্তি হিসেবে বিরাজমান।
পবিত্র কুরআনে রাব্বুল আলামিন ফরমান- “হে মাহ্বুব (সা.)! আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহ্কে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহ্ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়াময়।” (সূরা আলে ইমরান ৩: আয়াত ৩১) হাদিস শরীফে হযরত রাসুল (সা.) বলেন- “যে ব্যক্তি নিজের পিতামাতা, সন্তানসন্ততি সবার চেয়ে আমাকে বেশি ভালো না বাসবে সে মু’মিন হতে পারবে না।” (বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭ এবং মুসলিম শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৯) হযরত রাসুল (সা.) তাঁর তেষট্টি বছরের হায়াতে জিন্দেগিতে মানবজাতিকে দিয়েছেন সর্বোত্তম জীবন বিধান। সমগ্র মানবজাতির শ্রেষ্ঠ অনুসরণীয় আদর্শ মহামানব ছিলেন হযরত মোহাম্মদ (সা.)।
আল্লাহ্র মহান বন্ধু মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন- “হযরত রাসুল (সা.)-কে যে যতটুকু ভালোবাসেন, সে ততটুকু ইমানদার।” তিনি আরও বলেন- “ইমান পড়ালেখার বিষয় না, উহা হৃদয়ে ধারণ করার বিষয়। যারা রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসতে পেরেছেন, তারাই ইমানদার।” এ মু’মিন ব্যক্তির জন্য নামাজ পড়া ফরজ। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর বিখ্যাত গজলে হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা ও ভালোবাসা সম্পর্কে বলেন-
“আল্লাহকে যে পাইতে চায় হযরতকে ভালোবেসে
আরশ কুরসি লৌহ কলম না চাহিতে পেয়েছে সে।’
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন- “হে রাসুল (সা.)! আমিতো আপনাকে জগৎসমূহের প্রতি কেবল রহমতস্বরূপই প্রেরণ করেছি।” (সূরা আম্বিয়া ২১: আয়াত ১০৭) হযরত রাসুল (সা.) পৃথিবীর সকল জাতি গোষ্ঠীর জন্য আদর্শ স্বরূপ। মহান প্রভু সৃষ্টিজগতকে সৃষ্টি করার পূর্বে নুরে মোহাম্মদীকে সৃষ্টি করেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর নুর হতে সমস্ত মাখলুকাত সৃষ্টি করেন। হযরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে নুরে মোহাম্মদী তাঁর পৃষ্ঠদেশে দিয়েছেন। তারপর সকল নবি-রাসুলের সিনা-ব-সিনা হয়ে নুরে মোহাম্মদী জগতে হেদায়েতের কার্যধারা চালিয়ে ছিলেন। এ নুরে মোহাম্মদী সর্বশেষে স্বনামে স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করেন ১২ই রবিউল আউয়াল, সোমবার প্রত্যুষে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ বলেন-“হে নবি (সা.)! নিশ্চয়ই আমিতো আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং আল্লাহ্র আদেশে তাঁর দিকে আহবানকারী ও প্রজ্বলিত প্রদীপরূপে।” (সূরা আল আহযাব ৩৩: আয়াত ৪৫ ও ৪৬)
সমগ্র মানবজাতির জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ নিয়ে এ মহামানব জগতে শুভাগমন করেন। হযরত রাসুল (সা.) সৃষ্টিজগতের জন্য কল্যাণ ও শান্তির শ্রেষ্ঠ বার্তাবাহী বিশ্বজগতের জন্য রহমত। সৃষ্টিজগতে সকল সৃষ্টির চেয়ে আমাদের দয়াল রাসুল (সা.)-কে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়ে মহান আল্লাহ্ এই পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ্ তায়ালা হযরত রাসুল (সা.)-কে সকল নবি-রাসুল তথা সকল সৃষ্টির উপর মর্যাদা দান করেছেন। হযরত রাসুল (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে মহান প্রভু ঘোষণা করেন- “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ স্বয়ং ও তাঁর ফেরেশতারা নবির উপর দরুদ পাঠ করেন। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরাও তাঁর উপর দরুদ পড় এবং শ্রদ্ধার সাথে সালাম পেশ করো।” (সূরা আহযাব ৩৩: আয়াত ৫৬)
হযরত রাসুল (সা.)-এর সুউচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন-“আমি আপনার আলোচনাকে উচ্চ মর্যাদা দিয়েছি।” (সূরা ইনশিরাহ ৯৪: আয়াত ৪) হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভাগমন মহান প্রভুর অনেক বড়ো অনুগ্রহ। হযরত আদম (আ.) থেকে হযরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত যত নবি-রাসুল আগমন করেছেন, তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন, আমাদের প্রিয় রাসুল হযরত মোহাম্মদ (সা.)। সৃষ্টির শুরু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ এ পৃথিবীতে আগমন করবে সৃষ্টিকর্তা সেদিন আত্মাসমূহ একত্র করে জিজ্ঞেস করেছিলেন- “আলাসতু বি রাব্বিকুম”- আমি কী তোমাদের প্রভু নই? সৃষ্টির সাথে এটাই ছিল মহান প্রভুর প্রথম কথা। হযরত আদম (আ.)-এর আগমনের পূর্বেই ঊর্ধ্বজগতে নবুয়তের অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছে। ঐ অনুষ্ঠানে সকল নবি-রাসুলের থেকে প্রতিশ্রæতি নিয়েছেন হযরত রাসুল (সা.) সম্পর্কে। মহান প্রভু তাঁর নবুয়তের মাধ্যমেই নবুয়তের ধারার সূচনা করেন এবং হযরত রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে পৃথিবীতে নবি আগমনের সমাপ্তি করেন।
হযরত রাসুল (সা.) বলেন- আমি শেষ নবি। আমার পরে আর কোনো নবি বা রাসুল আসবে না, এতে আমার কোনো গর্ব নেই। মহান আল্লাহ্ হযরত রাসুল (সা.)-এর নুর হতে সমগ্র সৃষ্টিরাজি সৃজন করে তাঁকে একেবারে আপন করে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখেছেন। এজন্যই আল্লাহ্ তায়ালা নিজের সম্বন্ধে এরশাদ করেন- ‘রাব্বুল আলামিন’ মহাবিশ্বের প্রভু। হযরত রাসূল (সা.) সম্বন্ধে এরশাদ করেন- ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ মহাবিশ্বের রহমত। অর্থাৎ আল্লাহ্ তায়ালা যতটুকু জগতের প্রভু, হযরত রাসুল (সা.) ততটুকু জগতের জন্য রহমত।
হযরত রাসুল (সা.)-এর অতুলনীয় মর্যাদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (রা.) বর্ননা করেছেন- হযরত রাসুল (সা.) বলেন- আমাকে মহান প্রভুর পক্ষ থেকে পাঁচটি বিষয় দেওয়া হয়েছে, অন্য কোনো নবি-রাসুলকে তা দেওয়া হয়নি। এতে আমার কোনো গর্ব নেই।
১) সকল নবি-রাসুল তাদের জাতির জন্য প্রেরিত হয়েছে। আর আমি সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছি।
২) হযরত রাসুল (সা.) বলেন- আমার জন্য দুনিয়ার সমগ্র মাটি মসজিদ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ জমিনের যেকোনো অংশে উম্মতে মোহাম্মদী নামাজ আদায় করতে পারে এবং এ মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে পবিত্রতা অর্জন করতে পারে। এর আগে কোনো নবির উম্মতের এ সুযোগ ছিল না।
৩) আমার জন্য যুদ্ধলব্দ সম্পদ (গনিমত) হালাল করে দেওয়া হয়েছে, যা এর পূর্বে কোনো নবির জন্য ছিল না।
৪) আমাকে (শত্রæর অন্তরে আমার ব্যাপারে) ভয়ের সঞ্চার করা দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে।
৫) আমাকে সকল মানুষের সুপারিশ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্ প্রত্যেক নবিকে একটি করে বিশেষ সুপারিশ করার অধিকার দিয়েছেন। অন্য নবিরা দুনিয়াতে সে অধিকার ব্যবহার করেছেন। আমি বিশেষ সুপারিশের অধিকার সংরক্ষণ করে রেখেছি। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ সূত্রে মেশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ৫১২)
হাশরের ময়দানে হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদার যে সুমহান স্থান, তার নাম হলো মাকামে মাহমুদা বা প্রশংসিত স্থান। নাতে রাসুল (সা.)-এর শ্রেষ্ঠ রূপকার আল্লামা জামির ভাষায়- “হে জ্যোতির্ময়, হে মানবশ্রেষ্ঠ, আপনার পুত চেহারার দীপ্তি থেকে চাঁদ আলোকপ্রাপ্ত হয়েছে। আমরা আপনার যথোপযুক্ত প্রশংসা করতে অক্ষম, বরং সংক্ষিপ্তভাবে আমরা এটিই বলতে পারি, আল্লাহ্র পর তাঁর সৃষ্টিকুলে আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহান।”
হযরত রাসুল (সা.)-এর চরিত্র আদর্শের অধিকারী পৃথিবীর দ্বিতীয় কেউ নেই। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) বলেন- “হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা এত বেশি যে, কোনো মানুষ যদি তাঁর উপর খুশি হয়ে তাঁর শুভ জন্মদিনের অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করেন, আল্লাহ্ তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। তার কবরে আজাব হবে না।” মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-আমি আপনাদের শিখিয়েছি “বান্দা তত পাপ করতে জানে না, মালিক যত ক্ষমা করতে জানেন। ক্ষমা পাওয়ার জন্য উসিলা খুঁজতে হবে। আর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) হলো ক্ষমা পাওয়ার সবচেয়ে বড়ো উসিলা।”
আমাদের প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন জুড়ে আছেন হযরত মোহাম্মদ (সা.)। কবির প্রাণের তৃষ্ণা, আশা ভরসা হয়ে বিরাজ করেছেন নবি মোহাম্মদ (সা.)। তিনি তাঁর অসংখ্য গজল, কবিতা, প্রবন্ধের মধ্যে হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা তুলে ধরেছেন। তাইতো হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেমে বিভোর হয়ে কবি নজরুল লিখেছেন-
মুহাম্মদের নাম যতই জপি ততোই মধুর লাগে।
নামে এত মধু থাকে, কে জানিত আগে
ঐ নামের মধু চাহি, মন-ভ্রমরা বেড়ায় গাহি
আমার ক্ষুধা তৃষ্ণা নাহি ঐ নামের অনুরাগে।
সাধক কবি কাজী নজরুল ইসলাম হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর নাম মজনুর মতো জপ করতেন প্রতিনিয়ত। তিনি কোনো বাদশাহি সিংহাসন চান না, শুধু হৃদয়ে নবিজির নামকে ধারণ করে বাঁচতে চান। তাঁর একটি নাতে রাসুলে গভীর রাসুল প্রেমের আবেগ প্রকাশিত হয়েছে-
মোহাম্মদের নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই আগে
তাই কিরে তোর কন্ঠেরই গান এমন মধুর লাগে।
হযরত রাসুল (সা.) প্রকৃত আশেক ঘরে ঘরে তৈরি করার জন্য মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান তাঁর মোর্শেদ ইমাম শাহ চন্দ্রপুরী (রহ.) হুজুরের শুভ জন্মদিন স্মরণে সারা পৃথিবীর আশেকে রাসুলদেরকে দাওয়াত দিয়ে ‘বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন’ করেছেন। তিনি বলেছেন-হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেম হারিয়ে ফেলেছে মুসলমানগণ। তাই তিনি তাঁর অনুসারীদেরকে নামের পূর্বে আশেকে রাসুল লিখতে বলেছেন, যেন হযরত রাসুল (সা.)-এর মর্যাদা সম্পর্কে মানুষ জানতে পারে। তিনি যে ধর্ম আমাদের জন্যে রেখে গিয়েছেন, তাঁর রেখে যাওয়া ধর্মের নাম মোহাম্মদী ইসলাম। হযরত রাসুল (সা.)-কে সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদানের বিষয়টি জগদ্বাসীর নিকট আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজান উপস্থাপন করেছেন। বর্তমানে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর হযরত রাসুল (সা.)-এর নুরে মোহাম্মদীর নুর সিনায় ধারণ করে হযরত রাসুল (সা.)-এর প্রেমের ফেরিওয়ালা হয়ে সারা পৃথিবীতে মোহাম্মদ (সা.)-এর মর্যাদা তুলে ধরছেন। তিনি আমাদের মোর্শেদ কেব্লাজানের শুভ জন্মদিন স্মরণে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন আহŸান করেছেন। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে তাওফিক দিন, আমরা যেন আল্লাহ্র সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু হযরত রাসুল (সা.)-কে জীবনের সকল কিছুর চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারি। আমিন।
[লেখক: ইসলামি গবেষক]

সম্পর্কিত পোস্ট