Cancel Preloader

অলৌকিক কারামত

সূফী সম্রাটের উসিলায় পুকুরে ডুবে যাওয়া বাচ্চাটি জীবন ফিরে পায়


শাহরিয়ার মাহমুদ চৌধুরী


মহান রাব্বুল আলামিন যুগে যুগে মানুষের হিদায়েতের জন্য তাঁর মনোনীত মহামানবগণকে প্রেরণ করে থাকেন। প্রত্যেক মহামানবকে রাব্বুল আলামিন তাঁর স্বীয় গুণে গুণান্বিত করে দুনিয়াতে প্রেরণ করেন। নবুয়তের যুগে এসমস্ত মহামানবকে বলা হতো নবি-রাসুল, আর বেলায়েতের যুগে বলা হয় অলী-আল্লাহ্। হযরত রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে নবুয়তের যুগের পরিসমাপ্তির পর শুরু হয় অলী-আল্লাহ্দের যুগ অর্থাৎ বেলায়েতের যুগ। অলী-আল্লাহ্গণ আল্লাহ্র বন্ধু হওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়ে তাদের কাছে সাহায্য চাইলে আল্লাহ্ তাঁর বন্ধুর উসিলায় যে কোনো বিপদ-আপদ থেকে মানুষদের উদ্ধার করতে পারেন। বিংশ শতাব্দিতে এই পাপসংকুল পৃথিবীতে আল্লাহ্ দয়া করে বেলায়েতের যুগের শ্রেষ্ঠ ইমাম সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানকে প্রেরণ করেছিলেন। যাঁর সান্নিধ্যে গিয়ে অসংখ্য মানুষ নানাবিধ রোগ-শোক, বিপদ-আপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছেন এমন বহু ঘটনা রয়েছে। পাঠক মহলের জ্ঞাতার্থে তেমনি একটি ঘটনা উপস্থাপন করা হলো-
আশেকা রাসুল মোসাম্মাৎ মালেকা বানু। তিনি অলীদের বাদশা সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেব্লাজানের একজন ভক্ত। তাঁর ছোটো বোন রাজশাহী জেলার মোরশাইন এলাকার বাসিন্দা। একদিন তিনি তার শ্বশুড় বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে বেড়াতে যান। তার ছোটো ভাইয়ের ২ বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সেই ছেলেটি বিকাল বেলায় বাড়িতে অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলা করছিল। খেলতে খেলতে বাচ্চাটি পাশের পুকুরে পড়ে যায়। পুকুর ভর্তি তখন পানি। এ পানি ভর্তি এ পুকুরে পড়ে বাচ্চাটি যখন হাবুডুবু খাচ্ছিল, তখন তাকে উদ্ধার করার মতো কেউ পাশে ছিল না। তাদের সাথে খেলা করতে ছিল এমন ৫-৬ বছর বয়সী অন্য একটি ছেলে দৌড়ে এসে বাড়িতে জানায় যে, তাদের বাচ্চা পানিতে পড়ে গেছে। একথা শুনে বাড়ির অন্যরা দৌড়ে চলে যান পুকুরের কাছে বাচ্চাটিকে তুলে আনতে। গিয়ে তারা দেখেন বাচ্চাটি পানির উপর ভেসে আছে। একজন গিয়ে পুকুর থেকে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করেন। পুকুর থেকে বাচ্চাটিকে উপরে নিয়ে আসার পর দেখা গেল বাচ্চাটির কোনো সাড়া শব্দ নেই।
অজ্ঞান অচেতন কোনো শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে না। তাদের পরিবারের সকলের কান্না আহাজারিতে চারপাশ ভারি হয়ে যায়। সকলে নানাভাবে চেষ্টা করছে। সকলের চেষ্টাই যখন ব্যর্থ তখন সবাই ধরে নিয়েছে যে বাচ্চাটি মারা গেছে। বাচ্চাটির যেহেতু কোনো সাড়া শব্দ নেই, শ্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছে না, সেহেতু মারা গেছে ধরে নেওয়াটাই স্বাভাবিক। বাচ্চাটি মারা যাওয়ার ফলে তাদের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়। বাচ্চাটির বাবা-মা তাদের আদরের সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে যায়। কান্নাই যেন তাদের একমাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়ায় তখন। মালেকা বানু কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে তার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাটের উসিলা নিয়ে আল্লাহ্র নিকট আজিজি করে বাচ্চাটির জীবন ভিক্ষা চান। তিনি বাচ্চাটির জীবন ভিক্ষার জন্য মানত করেন। ‘দরুদে মাহদী’ পড়ে বাচ্চাটির গায়ে ফুঁ দিচ্ছিলেন আর ‘আত্মার বাণী’ পত্রিকা দিয়ে বাতাস করছিলেন বাচ্চার গায়ে। তিনি সূফী সম্রাটের উসিলা ধরে বাচ্চাটির জীবন ভিক্ষার জন্য আল্লাহ্র দরবারে কান্নাকাটি করে আজিজি করছিলেন। হঠাৎ করে বাচ্চাটি নড়ে উঠে এবং চোখ মেলে তাকায়। এদৃশ্য দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। দ্রুত বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা স্যালাইন দিলেন এবং বাচ্চাটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে। সেদিন উপস্থিত সকলে বুঝতে পারে এবং স্বীকার করে সূফী সম্রাটের উসিলায় মহান আল্লাহ্ তাদের বাচ্চাটিকে নতুন জীবন দান করেছেন অর্থাৎ মৃত থেকে জীবিত হয়েছে। তারা মহান আল্লাহ্র শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন এবং আল্লাহ্র প্রিয় বন্ধু সূফী সম্রাটের ভূঁয়সী প্রশংসা করেন এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। দরবার শরীফে মানত আদায় করতে এসে ঘটনার বর্ণনা করেন। আমিন।


[ইসলাম বিষয়ক লেখক]

সম্পর্কিত পোস্ট