Cancel Preloader

সম্পাদকীয়

মহান রাব্বুল আলামিনের অপার দয়ায় গত ১২ রবিউল আউয়াল, ১৪৪২ হিজরি, ৩০ অক্টোবর, ২০২০ খ্রি. শুক্রবার মহান আল্লাহ্র শ্রেষ্ঠ
বন্ধু রাহ্মাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)-এর ১৪৯৫তম (হিজরি সাল অনুযায়ী) শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা
ও মহাধুমধামের সাথে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে অনুষ্ঠিত হয় ‘আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন’।
প্রতিবছর মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.)
হুজুর কেব্লাজানের আহ্বানে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানটি বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে উদ্যাপিত হয়ে
থাকে এবং দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুল সরাসরি অংশগ্রহণ করে থাকেন। এই বছর কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস)-এর
কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উদ্যাপন করেন। বিশ্বের ৬০টিরও
অধিক দেশের আশেকে রাসুলবৃন্দ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরাসরি অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন। উল্লেখ্য যে, এই বছর সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ
ঈদ, দয়াল রাসুল (সা.)-এর জন্মঈদ অনুষ্ঠানটিতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি সংখ্যক আশেকে রাসুলদের অংশগ্রহণের সুযোগ
হয়। কেননা আমাদের দরবার শরীফের বৃহৎ অনুষ্ঠানগুলোতে শুধুমাত্র পুরুষরাই অংশগ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু এই বছর অনলাইন
প্ল্যাটফর্মের কারণে বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আশেকা রাসুল মহিলা জাকেরবৃন্দও অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৯টা থেকে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর প্রখ্যাত ইসলামি
চিন্তাবিদ, গবেষক, ওলামায়ে কেরাম অনুষ্ঠানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন এবং আশেকে রাসুল শিল্পীবৃন্দ হামদ,
নাত ও গজল পরিবেশন করেন। অতঃপর আমার (ড. কুদরত এ খোদা) সঞ্চালনায় বিশ্বের ২৬টি দেশের ২৯ জন প্রতিনিধি ভিডিও
কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি সংযুক্ত হন এবং তারা কিভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উদ্যাপন করছেন, সেই বিষয়ে তাদের
অভিমত ব্যক্ত করেন। তাদের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, ইতঃপূর্বে এতোটা আনন্দ ও উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে কখনোই হযরত রাসুল
(সা.)-এর শুভ জন্মদিন উদ্যাপনের সুযোগ তাদের হয়নি। তারা অবহিত করেন যে, তারা আজ সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন
আমাদের মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানকে দেখার এবং তাঁর বক্তব্য শোনার জন্য। ফলে এবার তাদের আনন্দের মাত্রা
বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া তারা জানান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলামের ব্যাপক
জাগরণ ঘটেছে এবং সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ গ্রহণ করে হযরত রাসুল (সা.)-এর দিদার লাভ করার
সৌভাগ্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা প্রতিনিয়ত, বিপদ, আপদ, বালা-মুসিবত থেকে মহান আল্লাহ্র অলৌকিক সাহায্য ও দয়া
পাচ্ছেন। বিদেশী আশেকে রাসুলদের পর্বটি শেষ হওয়ার পর সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের সম্মানিত সাহেবজাদা হুজুরগণ বক্তব্য
প্রদান করেন। সর্বশেষ সম্মেলনের আহ্বায়ক আমাদের প্রাণপ্রিয় মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান তাঁর মহামূল্যবান বক্তব্য
প্রদান করে আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন।
এবারের পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)-এর অনুষ্ঠানটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত দেওয়ানবাগ শরীফের বিভিন্ন আঞ্চলিক দরবার
শরীফ, খানকাহ শরীফ ও জাকের মজলিসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাজার হাজার আশেকে রাসুল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণ
করেন। এছাড়া বহির্বিশ্বের বিভিন্ন খানকাহ শরীফ ও জাকের মজলিসগুলোতেও অসংখ্য আশেকে রাসুল উপস্থিত হয়ে পবিত্র ঈদে
মিলাদুন্নবি (সা.) অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। আরেকটি লক্ষ্যণীয় বিষয় ছিল, বিভিন্ন এলাকার আশেকে রাসুলবৃন্দ সম্মিলিত উদ্যোগে
খোলা মাঠ, স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণে প্রজেক্টরের ব্যবস্থা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের সাথে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। শুধু তাই নয়, হাজার
হাজার আশেকে রাসুল পরিবার তাদের বাড়িতে বসে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন-সহ হযরত
রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মঈদ আমাদের সাথে উদ্যাপন করেন।
আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজান পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) যথাযথ মর্যদায় উদ্যাপনের জন্য আশেকে রাসুলদের
নির্দেশ প্রদান করে বলেছিলেন, যার যার বাসায় উন্নতমানের খাবার রান্না করার জন্য, যা মহান আল্লাহ্র অপার দয়ায় তাবারুকে পরিণত
হবে। ফলে আশেকে রাসুলেরা স্বতঃস্ফূর্তের সাথে নিজ গৃহে তাবারুক রান্না করেন। উল্লেখ্য যে, সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের অনুসারী
আশেকে রাসুলবৃন্দ হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মদিনে পশু জবাই, বাড়িতে বাড়িতে আলোকসজ্জা, নতুন জামাকাপড় পরিধান-সহ
উনড়বতমানের খাবার রানড়বা করেন। এছাড়া তারা মহল্লায় মহল্লায় গরু জবাই করে সর্বসাধারণের নিকট বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে মাংস
বিতরণ করেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের প্রস্তাবে ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষ্যে
দিনটি সরকারী ছুটি ঘোষণা করেন। মালয়েশিয়ার পেনাং-এ সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের ভক্তবৃন্দ রাস্তায় রাস্তায় জনসাধারণের নিকট
মিলাদ মাহ্ফিলের তাবারুক বিতরণ করেন। এছাড়া বিশ্বের আরো অনেক দেশে আশেকে রাসুলেরা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)
উপলক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এভাবে দেশ ও বিদেশের আশেকে রাসুলবৃন্দ মহাধুমধামের সাথে এবার হযরত রাসুল
(সা.)-এর শুভজন্মদিন উদ্যাপন করেন। উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে এই বরকতময় অনুষ্ঠানটি
উদ্যাপনের জন্য সরকারী ছুটি-সহ নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এজন্য সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানের নুরানি কদম মোবারকে জানাই লাখো শুকরিয়া, যিনি দয়া করে বিশ্ববাসীকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি
(সা.) উদ্যাপনের সুযোগ করে দিয়েছেন। আমিন।

সম্পর্কিত পোস্ট